এরপর দেবী স্বপ্নে এসে জমিদার বৈকুন্ঠ বাবুকে আদেশ দেন, তাকে পুনরায় রায় বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য। স্বপ্নাদেশ ছিল মেয়ে বুড়ির নামেই তাকে ডাকতে। স্বপ্নে বলা হয়, দেবীর পুজো শুরু হলেই, তার ঘর আবার আগের মতোই সুখ আর শান্তিতে ভরে যাবে।
আরও পড়ুন : পুজোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন চারণকবি মুকুন্দ দাস, দশ কুণ্ডের জল-মাটিতে আজও দেবীবন্দনা আনন্দময়ী কালীবাড়িতে
advertisement
দেবীর স্বপ্নাদেশের পরে রায় বাড়িতে বন্ধ হয়ে যাওয়া দুর্গাপুজো ফের শুরু হয়। পুজো শুরু হয় মেয়ে বুড়ির নামে। দেবীকে সবাই ডাকতে থাকেন বুড়ি মা বলেই। বছর খানেকের মধ্যেই আর এক মেয়ের জন্ম হয় রায় পরিবারের। ইনিও ছিলেন পরমাসুন্দরী।
বছর ১১ বয়স হতেই বৈকুণ্ঠবাবু মেয়েকে পাত্রস্থ করেন। বাঁকুড়ার তাজপুরের নন্দলাল চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন তিনি। ঘরজামাই করে রাখেন নন্দলালবাবুকে। এর পর নন্দলাল চট্টোপাধ্যায় তার শ্বশুর মহাশয়ের সাথে চলে আসেন গোপালপুরে। সেখানেই জমিদারির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বুড়ি মায়ের পুজো।
আরও পড়ুন : অতিমারিতে ঘটপুজোতেই সীমাবদ্ধ ৩০০ বছরের গোবরডাঙা রাজবাড়ির দুর্গোৎসব
গোপালপুরে ১৬৫০ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয় বুড়ি মায়ের পুজো। শ্মশানঘাট বলে পরিচিত জমিতেই শুরু হয় বুড়ি মায়ের পুজো। চট্টোপাধ্যায় পরিবারে এখনও হয় সপ্তসতী হোম। এই হোমের সময় দেবীর কাছে মনের ইচ্ছা প্রকাশ করলে দেবী তা পূরণ করেন বলেই বিশ্বাস চট্টোপাধ্যায় পরিবারের। পরিবারের প্রবীণা বধূ ঝর্ণা চট্টোপাধ্যায় বলেন, তাঁদের বুড়ি মায়ের বরণ হয় না। পুজোর সময় দু’দিন মেয়েরা সিঁদুর খেলে। অষ্টমীর বলির পরে এবং বুড়ি মাকে বিদায় দেওয়ার সময় বাড়ির মহিলারা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। দুর্গাপুর মহকুমার অন্যতম প্রাচীন এবং বিখ্যাত পুজোগুলির মধ্যে এটি অন্যতম ৷