করোনার আগে পর্যন্ত অবশ্য মোট চারটি ট্রেন যাওয়া আসা করতো সকাল দশটার মধ্যে। কিন্তু বর্তমানে সকালের দিকে শান্তিপুর থেকে কৃষ্ণনগর ৮:৪৯ নাগাদ যায়, ফিরে আসে ৯:৪৫ এ। দিনের মধ্যে এই একবারই যাওয়া এবং আসার ব্যবস্থা রয়েছে বর্তমানে। রেল লাইনের একেবারে পাশে তার চায়ের দোকান হওয়ার কারণে, একদিকে যেমন রেললাইনের কিছুটা কম্পন অনুভব করেন তেমনই দুই কিলোমিটার দূরত্ব থাকতে ট্রেন ঢোকার আগে যখন হর্ন দেয়, তখন ননী বাবুর কানে সকলের আগে পৌঁছায়। চায়ের খরিদ্দার ফেলে রেখেই, মরিয়া হয়ে ছোটেন, খোলা লেভেল ক্রসিং দিয়ে পারাপার হওয়া পথ চলতি যানবাহন, স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের রক্ষা করতে।
advertisement
আরও পড়ুন: যাদবপুরের মৃত ছাত্রের জন্মদিনে শোকে পাথর পরিবার, চোখের জলে ছবিতে মালা দিলেন মা
এলাকাবাসীরা বলেন এমন দিন থাকে যখন অঝোরে বৃষ্টি, কখনও ছাতা মাথায় দিয়ে কখনও বা বৃষ্টিতে ভিজেই ননী বাবু তার কর্তব্যে অনঢ়। তবে এ সবই আদৌ কি আন্তরিক নাকি এর পেছনে রয়েছে কোনও উদ্দেশ্য । ননী বাবুর সাফ কথা, বয়স হয়ে গেছে, যেখানে পথ চলতি হাজার হাজার সাধারণ মানুষ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী একটি গেট নির্মাণ হচ্ছে না, সেখানে চাকরি বা অন্য কোনও সুবিধা তিনি আশা করেন না। বরং কৃতজ্ঞ রেলের জায়গার উপর চা দোকান করে পরিবারের মুখে দুটো খাবার তুলে দিতে পারছেন তার জন্য। তবে তিনি, সকলের জন্য সুরক্ষার দাবি করেছেন।
আরও পড়ুন: এবার চাষিদের কাজে লাগবে ড্রোন, চুটকিতে হয়ে যাবে দীর্ঘমেয়াদী কাজ
উদাহরণ হিসেবে বলেন, রেলের সময়সীমা পরিবর্তিত হলে প্রথম দিনটা তিনি জানতে পারেন না।, দুশ্চিন্তা একটাই সেদিন যদি কিছু ঘটে যায়! তবে এরপর থেকে তা আবারও অভ্যাসে পরিণত হয়।এলাকাবাসী এবং পথ চলতি সকলেই একবাক্যে ননীবাবুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তারা বলেন যেখানে এক মিনিট সময় কেউ কারোর জন্য ব্যয় করে না সেখানে এত বছর ধরে ননীবাবুর এই আত্মত্যাগ সত্যিই প্রশংসা যোগ্য। জাতীয় সড়কের একেবারে পাশ থেকে, বাদকুল্লাগামী এই রাস্তাটি সোজা নদিয়ার শেষ সীমান্ত ফতেপুর বাংলাদেশ বর্ডার পর্যন্ত যাওয়া যায়। এই রাস্তা ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীদের যাতায়াতের জন্য তৈরি হয়েছিল। তবে আজও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জনবহুল।
Mainak Debnath