বিক্রিবাট্টা কমছে, পুরনো বহু পাঠক হারিয়ে যাচ্ছে- এমন অভিযোগ যখন সর্বত্র, ঠিক তখনই বোলপুর শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলার ময়দানে উঠে এল উল্টো ছবি। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে হাতে একটি স্মার্টফোন থাকলেই নিমেষের মধ্যে সমস্ত তথ্য হাতের মুঠোয় চলে আসে। তবে সেই স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের দাপট সত্ত্বেও এবারের পৌষ মেলায় ১২টি স্টল থেকে প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
advertisement
বোলপুর শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা মূলত হস্তশিল্প ও কুটির শিল্পের মেলা হলেও, বই বিপণনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করল একাধিক প্রকাশনা সংস্থা। এর মধ্যে বিশেষভাবে নজর কেড়েছে বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ। গ্রন্থন বিভাগের স্টলে প্রায় ৫ লক্ষ টাকারও বেশি বই বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি পাঠকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে স্টলে কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে বইয়ের তালিকা দেখারও ব্যবস্থাও ছিল। বিশেষ করে কবিগুরুর আঁকা ছবিতে সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে প্রকাশিত বইগুলি বইপ্রেমীদের বিশেষ আকর্ষণ করে।
আরও পড়ুনঃ কনকনে ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে সমুদ্রগড় স্টেশনে বৃদ্ধের মৃত্যু! বছরের শেষ দিনে মর্মান্তিক ঘটনা
এই বছর ছয় দিনব্যাপী পৌষ মেলায় বিশ্বভারতীর গ্রন্থন বিভাগের বিপণন কেন্দ্রে বইপ্রেমীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কবিগুরুর রচনার চাহিদা ছিল তুঙ্গে। কপিরাইট উঠে যাওয়ার পরেও বিশ্বভারতী প্রকাশিত গ্রন্থের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে বলেই জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা। উন্নত মানের কাগজ, পাশাপাশি সমস্ত নির্ভুল বানান, সুস্পষ্ট হরফ ও গাঢ় খয়েরি রঙের রেক্সিন বাঁধাই পাঠকদের কাছে বিশ্বভারতী প্রকাশনার বইকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে। গ্রন্থন বিভাগ থেকে প্রকাশিত মোট ১৮টি খণ্ডে রবীন্দ্রনাথের সুবিশাল সাহিত্যকর্মের সংকলন বিপুল সংখ্যক পর্যটক কিনেছেন।
এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ জন পাঠক এই সংকলন কেনার আগ্রহ জানিয়ে অর্ডারও দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এছাড়াও কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ, চিঠিপত্র, বিভিন্ন ভাষায় ‘গীতাঞ্জলি’র অনুবাদ, ‘রবীন্দ্র পরিচয়’, ‘গীতবিতান’, ‘স্বরবিতান’ ও রবীন্দ্রসপ্তাহের বক্তৃতা সংকলনের চাহিদা ছিল যথেষ্টই।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অতিগ ঘোষ বলেন, “পৌষমেলায় গ্রন্থন বিভাগের স্টলে বহু বই বিক্রি হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যুগেও বইপ্রেমীদের বইয়ের প্রতি ভালোবাসা বাড়ছে, এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।” পৌষমেলায় রাজনৈতিক দলগুলির স্টলেও বই বিক্রি ছিল উল্লেখযোগ্য। সিপিএম, এসএফআই ও তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা স্টল ছাড়াও ছাত্র সংসদের স্টলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক বই এবং অনুব্রত মণ্ডলের ‘খেলা হবে’ বই যথেষ্ট বিক্রি হয়েছে।






