মুর্শিদাবাদ জেলার শতাব্দী প্রাচীন শহর কান্দি। কান্দি শহরের রুপপুরে অবস্থিত এই রুদ্রদেব মন্দির। একদা বৌদ্ধ মূর্তিকে শিব মূর্তি হিসেবে পুজো করা হত এই মন্দিরে। জানা যায়, দ্বাদশ শতাব্দীতে তিব্বত বা নেপাল হিমালয় এলাকা থেকে জৈনক বৌদ্ধ তান্ত্রিক এই বঙ্গ দেশে আসেন। তারা ময়ূরাক্ষী নদীর ধারে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সঙ্গে করে নিয়ে আসেন একটি বৌদ্ধ মুর্তি। সেখানে তন্ত্র সাধনা করতে থাকেন।
advertisement
কান্দি সিংহ বংশীয় জৈনক রুদ্রনাথ সিংহ তান্ত্রিক কামদেব ব্রহ্মচারী শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তন্ত্র সাধনা লাভ করেন। পরবর্তীতে কামদেব ব্রহ্মচারীর মৃত্যুর পর রুদ্রদেব সিংহ বুদ্ধ মূর্তিটিকে রুপপুরে এই জায়গায় নিয়ে এসে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে যা মূল মন্দির হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আসলে বুদ্ধদেবের পাঁচ রকমের মূর্তি আছে। এই মুর্তি অক্ষর্ব মূর্তি হিসেবে পরিচিত। কামদেব ব্রহ্মচারীর সঙ্গে আরও একটি মূর্তি ছিল যা কাল রুদ্র ভৈরব। কাল রুদ্র ভৈরব মুর্তি চুরি যায় ১৯৫০ সালের আগেই। তবে কেউ বলে চুরি যায়। কেউ বলে গঙ্গা স্মান করাতে গিয়ে পড়ে যায়। জলে পড়ে যাওয়ার পরে কাটোয়ার কাছে নৈহাটি গ্রামে থেকে উদ্ধার করা হয়। সেখানে গ্রামের সাধারণ মানুষ তা প্রতিষ্ঠা করেন।
আরও পড়ুনঃ Murshidabad News: চাকরি দুর্নীতির কাণ্ডে মুর্শিদাবাদের কৌশিক গ্রেফতার, কে এই কৌশিক? জানুন
কালরুদ্র মুর্তিটি শিবের ভৈরব মুর্তি। যার বাহন কুকুর। কালরুদ্র ভৈরব নাম অনুসারে নাম করণ হয় রুদ্রদেব মন্দির। আবার কাল রুদ্র নাম অনুসারে এই রুদ্রদেব মন্দির এবং রুদ্র সিংহ নাম অনুসারে এই রুদ্রদেব বলা হত। এই দুটি মত চলিত আছে। বর্তমানে এই বৌদ্ধ মুর্তিটি হরিদ্বার থেকে নিয়ে আসা হয়। তারপর আজও পুজো হয় বিভিন্ন সময়ে। বাঘডাঙ্গা রাজ পরিবার ও জেমো রাজ পরিবার এই বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করে ১৩০৯ সালে। পূর্ব দিকে ও পশ্চিম দিকে যে শিব মন্দির আছে দুটি বাঘডাঙ্গা রাজ পরিবারের ও দুটি জেমো রাজ পরিবারের। এই শিব মন্দিরের ওপরেটেরাকোটা কাজ আছে। সেখানেই প্রতি বছর শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে মহা ধুমধমার সঙ্গে পুজোর আয়োজন করা হয়। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমান। এই মন্দিরকে খুবই জাগ্রত বলে জানান ভক্তরা।
Koushik Adhikary