বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানের কুড়মুন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজে যোগ দিয়েছিলেন রেনু খাতুন। শুক্রবার তাঁর কাজের জায়গার বদল ঘটল। তিনি এখন থেকে বর্ধমানের জগৎবেড় প্রমোটিস ট্রেনিং স্কুলে কাজ করবেন।কুড়মুন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী হিসেবেই এখানে কাজ করবেন তিনি। বেতন তুলবেন কুড়মুন থেকেই। যেহেতু কবজি থেকে তাঁর একটি হাত নেই, সেকথা ভেবেই প্রমোটিস ট্রেনিং স্কুলে তাঁর কর্মক্ষেত্র ঠিক করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর।
advertisement
শুক্রবার সেখানে কাজে যোগ দিলেন রেনু খাতুন। অভিযোগ, নার্স হিসেবে সরকারি চাকরি করা আটকাতে কবজির নীচ থেকে হাত কেটে নিয়েছিল রেনুর স্বামী। ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। রেনুর পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাটা হাত নিয়েই রেনু চাকরি করবেন বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেই মতো পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁকে দুর্গাপুরের নার্সিংহোমে নিয়োগ পত্র তুলে দেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ২১ জুন বর্ধমানের সিএমওএইচ অফিসে কাজে যোগদান করেন রেনু। এর পর বৃহস্পতিবার তাঁকে সিএমওএইচ দপ্তর থেকে বর্ধমান ১ ব্লকের কুড়মুন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বদলি করা হয়। আজ তাঁকে জগৎবেড়ের প্রমোটিস ট্রেনিং স্কুলে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ডাল চোর! বাংলার অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রে চাঞ্চল্যকর চুরি, তাজ্জব গোটা এলাকা
রেনু খাতুনকে পেয়ে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে প্রমোটিস ট্রেনিং স্কুলের নার্সিং পড়ুয়ারা। রেনুর মুখ থেকে শোনা জীবন সংগ্রাম ও লড়াকু মনোভাবের কাহিনি আগামী দিনে তাঁদেরও সাহস যোগাবে বলে জানান নার্সিং ছাত্রীরা।
এই প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়া বাঁকুড়া জেলার অনুশ্রী দাস বলেন, 'রেনু খাতুনের ঘটনা জেনেছিলাম। ইচ্ছা ছিল তাঁকে কাছ থেকে দেখার। আমরা তাঁর সঙ্গ পাচ্ছি এটা ভাবনারও অতীত ছিল। আমরা আপ্লুত। আমাদের জীবনে অনেক ছোট ছোট সমস্যা আসে। সেগুলোকে বড় করে না দেখে কীভাবে জয় করতে হবে তার পাঠ দিয়েছেন রেনু খাতুন।'
অন্যদিকে, রেনু খাতুন জানিয়েছেন, এ দিন এই নার্সিং স্কুলে এসে তাঁর ফেলে আসা নার্সিং কলেজে পড়ার সেই দিনগুলির স্মৃতি মনে পড়ছে। তবুও তাঁর জীবনে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আজও তিনি অপেক্ষায় আছেন, প্রকৃত দোষীরা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়। রেনুর জন্য রাজ্য সরকার কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷