মৃৎশিল্পীদের বক্তব্য, প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। এক বান্ডিল সুতলি দড়ি, যা এক মাস আগে মিলত ২২০০ টাকায়, এখন তার দাম ৩৩০০ টাকা। গত বছর নদী থেকে মাটি আনতে খরচ হয়েছিল ১২ হাজার টাকা, এ বছর সেই খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৮ হাজারে। বৈধ নথিপত্র ছাড়া নদী থেকে মাটি তুলতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় শিল্পীরা বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়দের থেকে চড়া দামে মাটি কিনতে। অথচ যারা প্রতিমার অর্ডার দিচ্ছেন, তারা বেশি দাম দিতে নারাজ। অর্ডারের সংখ্যাও কমছে।
advertisement
আরও পড়ুন: তুমুল বৃষ্টিতে ১৬০ মিটারের বাঁধ টপকে এলাকা ভাসাচ্ছে জল! পরিস্থিতি না দেখলে বিশ্বাস হবে না
প্রবীণ শিল্পী বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, “অন্যান্য বছর আমরা ২০ থেকে ২৫টি দুর্গা প্রতিমার বরাত পেতাম। এ বছর অর্ডার কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ থেকে ১০। শুধু মাটি নয়, এক কাহন খড়ের দামও ৯০০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭০০ টাকা। একই সঙ্গে কর্মী পাওয়ার সমস্যাও দেখা দিয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এক শিল্পীর কথায়, “আগে মরশুম শেষে কর্মীরা ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা পেতেন। এত কম টাকায় সংসার চালানো সম্ভব নয়। তাই অনেকেই ভিন রাজ্যে অন্য কাজে চলে গিয়েছে।” পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেকেই দুর্গার বদলে ছোট আকারের বিশ্বকর্মার প্রতিমা গড়ার দিকে ঝুঁকছেন। প্রবীণ শিল্পীদের দাবি, বর্তমান অবস্থা দেখে নতুন প্রজন্ম এই পেশায় আসতেই চাইছে না। ফলে ঐতিহ্যবাহী শিল্প বিপন্নতার মুখে। তাদের আক্ষেপ— ক্লাবগুলির অনুদান বাড়লেও মৃৎশিল্পীদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেই। অর্থাভাব, কাঁচামালের দামবৃদ্ধি, প্রশাসনিক জটিলতা ও শ্রমিক সঙ্কট— সব মিলিয়ে বসিরহাটের মাটির প্রতিমা শিল্প আজ বড়সড় চ্যালেঞ্জের মুখে। শিল্পীদের আকুল আবেদন, সরকারের সরাসরি সহায়তা না এলে এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে একদিন।