প্রায় ন’বছর আগে দেউলপুর পঞ্চাননতলা বারোয়ারি রথের সূচনা হয়। দেউলপুর-সহ আশপাশের প্রায় ৫-৬ টি গ্রামে বারোয়ারি রথ ছিল না। মেলা দেখা ও রথের দড়িতে টান দিতে হলে যেতে হত কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে। যে কারণে গ্রামের অনেকেই প্রতি বছর রথের মেলার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হত। ২০১৬ সালে গ্রামের কয়েকজন মানুষের যৌথ উদ্যোগে প্রথম রথ মেলায় আয়োজন হয়। প্রথম বছরেই দারুণ সাড়া মেলে সাধারণ মানুষের। আরও বেশি করে মানুষের কাছে এই রথের উৎসব পৌঁছে দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল বিনামূল্যে খাবারের স্টল। গ্রামের বেশ কিছু মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। যারা প্রতিবছর রথ মেলায় নানা দায়িত্ব পালন করেন। নবম বর্ষে দেউলপুর পঞ্চাননতলা রথ। এবার বিভিন্ন গ্রাম থেকেও হাজার হাজার মানুষ হাজির হয়েছে। রথের মেলা মানেই নানা জিনিসের পসরা। এখানে মেলার পসরা খুব বেশি না থাকলেও বিনামূল্যে খাবারের স্টল বা প্রসাদ বিতরণ মানুষকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে।
advertisement
রথের দিন বিকেল ৫টা নাগাদ পঞ্চানন তলা মাঠ থেকে রাস্তার মুখে রথ টানার অপেক্ষায় রথের দড়ি হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য মানুষ। মাঠের মাঝে শঙ্খ, ঘণ্টা, ধ্বনিতে প্রভু জগন্নাথের পুজো চলছে তখনও। মাঠের ধার বরাবর স্টলগুলিতে মানুষের ভিড়। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি স্টল রয়েছে, যেগুলি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জিনিস পাওয়া যাচ্ছে। সেই স্টল গুলিতেই উপচে পড়া ভিড়। মেলায় ঘুরে ঝাল মুড়ি খাবার আনন্দটাই আলাদা। সেই আনন্দ নিতে সর্বাধিক মানুষ ঝালমুড়ির লাইনে। অন্যদিকে কফি, পাঁপড়, ও মিষ্টির দোকানেও দারুণ ভিড়। খুদেরা আগ্রহ দেখাচ্ছে লজেন্স স্টলে। রথের দিন কয়েক ঘণ্টা গোটা মাঠ জুড়ে থিকথিক করছে কালো মাথা। এই ভিড়ের মধ্যেও উদ্যোক্তারা দর্শনার্থীদের নানাভাবে সহযোগিতা করে চলেছে।
জেলা বহু রথ মেলার মাঝে দেউলপুর পঞ্চাননতলা বারোয়ারি রথ মেলা পেয়েছে অন্য পরিচিতি। প্রতিবছর বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়। উদ্যোক্তাদের আন্তরিকতায় আরও বেশি করে মানুষকে মেলা মুখী করে তুলছে। গ্রামে এমন জাঁকজমকপূর্ণ রথ মেলা আয়োজন হয় স্থানীয় মানুষ ভীষণ আনন্দিত। এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তারা জানান, কয়েকটি গ্রামের মানুষের কথা ভেবেই এই রথ মেলার আয়োজন। প্রভু জগন্নাথের ছাপান্ন প্রসাদের মতোই এখানে বিভিন্ন জিনিস বিতরণ করা হয় দর্শনার্থীদের। গ্রামের বেশ কিছু মানুষ এই প্রসাদের দায়িত্ব বহন করছেন অতি উৎসাহের সঙ্গে।
রাকেশ মাইতি