অতীতের সেই সমস্ত দিন যেন আজও পাঁচকড়ি বাবুর চোখের সামনে ভাসছে। ১৯৭১ সালের হরিদ্বারের কাছে উত্তরপ্রদেশের রুড়কী ট্রেনিং সেন্টারে মোতায়েন থেকে ১৬০০ যুদ্ধবন্দিকে নজরদারিতে রেখেছিলেন তিনি। রুড়কী এলাকাতে রাতের বেলা আলো নিভিয়ে দেওয়া হত। সাইরেন বাজত। এলাকার কোনও বাড়িতে আলো জ্বলছে নাকি তা দেখে সতর্ক করতে হত। সেই সঙ্গে যুদ্ধবন্দি হয়ে থাকা পাক সেনার উপর নজরদারির কাজ চলত। সেই সময় তিনি ছিলেন লেন্স নায়েক।
advertisement
বর্তমানের এই পরিস্থিতিতে প্রতি মুহূর্তেই অতীতের স্মৃতি যেন তাঁর মনে দোলা দিচ্ছে। তিনি বলছেন, ভারত একেবারে যোগ্য জবাব দিচ্ছে পাকিস্তানকে। এই জবাব পাকিস্তানের আরও আগে পাওয়া উচিত ছিল। খবরের কাগজে চোখ আর কবিতা লিখে তাঁর দিন কাটে। তবে বর্তমানের এই পরিস্থিতিতে সারাদিন তিনি চোখ রাখছেন টিভিতে।
আরও পড়ুন: ‘টিটিই’ এবং ‘টিসি’-র মধ্যে পার্থক্য কী বলুন তো…? অধিকাংশই ‘ভুল’ বলছেন, আপনি জানেন?
মাত্র ২২ বছর বয়সে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে পুরুলিয়া শহরে এসে সেনাবাহিনীতে পরীক্ষা দেন। ১৯৬৩ সালের ২১-শে জানুয়ারি সেনাতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তারপর উত্তরপ্রদেশের রুড়কীতে প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁর প্রথম পোস্টিং হয় কাশ্মীরের জম্মুতে। সেখান থেকে শ্রীনগর। তারপর লাদাখ। আর লাদাখ থেকেই ১৯৬৫-র যুদ্ধে পাক সীমানায় একেবারে শিয়ালকোট সেক্টরের কালুচকে।
মাত্র ৫০ টাকায় তিনি সেনাবাহিনীতে কাজ শুরু করেন। আর যখন অবসর নেন ১৯৭৬ সালে তখন তাঁর বেতন ছিল ৪৫০ টাকা। চারটে মেডেল পেয়েছিলেন তিনি। এখন ওই মেডেল তাঁকে যেন তাতিয়ে দিচ্ছে। নিয়ে যেতে চাইছে পাক সীমানার ব্যাটেল ফিল্ডে। পুরুলিয়ার এই দালান বাড়িতে থাকলেও বছর ৮৫-র বৃদ্ধের মন যে পড়ে রয়েছে সেই যুদ্ধক্ষেত্রেই। প্রতিনিয়ত তিনি স্বপ্ন দেখছেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের পতাকা ওড়ার।
শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়