স্কুলে মিড-ডে-মিলের ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও অনেক পড়ুয়া প্রতিদিন টিফিন খরচ বাবদ বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসে। সেই টাকা দিয়ে তারা বাইরে থেকে অস্বাস্থ্যকর খাবার কিনে খেত। ঠিক সেই অভ্যাস বদলাতেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই উদ্যোগ। এখন টিফিনের টাকা হাতে পেলেই পড়ুয়ারা নিজেদের ভাঁড়ের দিকে ছুটে যায়। আনন্দ করে নিজের টাকা ভরে দেয় ভাঁড়ের ভেতর। ভাঁড়গুলি বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ঘরে সারি করে রাখা রয়েছে, আর প্রতিদিন স্কুল ছুটির আগে শিক্ষকরা দেখে নেন কোন কোন ছাত্রছাত্রী সঞ্চয় করেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমন কল্যাণ প্রধান বলেন, পড়ুয়ারা শুধু বাইরের জাঙ্ক ফুড কেনা কমায়নি, বাচ্চাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ এবং টাকা সঞ্চয়ের প্রবণতাও বেড়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন : ব্যবসার পরিকল্পনা থাকলে এই সুযোগ মিস করবেন না! ঋণ থেকে লাইসেন্স, শিল্পের সব সমাধান এক ছাতার তলায়
আত্মীয়স্বজনদের দেওয়া টাকাও আগে অনেক সময় ভুল জিনিসে খরচ করে ফেলত ছোটরা। কখনও খেলনা, কখনও চকোলেট। কিন্তু সঠিক আর্থিক অভ্যাস গড়ে উঠছিল না। এবার ‘আমার ব্যাংক’ প্রকল্পে সেই অর্থও বাচ্চারা জমাতে পারছে নিজেরাই। শিক্ষকরা বলছেন, “শুধু টাকা জমানো নয়, বরং টাকার মূল্য বোঝানোই আমাদের লক্ষ্য।” প্রতিদিন কত টাকা জমাল, কখন জমাল, এসব হিসেব নিজেরাই দেখে নিচ্ছে ছাত্ররা। এতে একদিকে সঞ্চয়ের আনন্দ পাচ্ছে, অন্যদিকে ছোট থেকেই তৈরি হচ্ছে শৃঙ্খলা ও পরিকল্পনার মানসিকতা। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আশা করছেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা ভবিষ্যতে আর্থিকভাবে আরও সচেতন ও দায়িত্ববান হবে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিদ্যালয় থেকে পড়ুয়ারা যখন ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে বিদায় নেবে, তখনই তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে সেই সঞ্চয়ে ভরা মাটির ভাঁড়। দীর্ঘদিনের সঞ্চিত টাকা একবারে হাতে পেয়ে পড়ুয়ারা যেমন খুশি হবে, তেমনই সেটা কাজে লাগাতে পারবে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী। কেউ স্কুল সামগ্রী কিনতে পারবে, কেউ ব্যক্তিগত কোনও জরুরি কাজে ব্যবহার করতে পারবে। অভিভাবকেরাও বলছেন, ছোট বয়সে এই শেখানোই বড় হয়ে জীবনে কাজে লাগবে। কারণ সঞ্চয়ের অভ্যাস একবার তৈরি হলে তা আজীবন জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকে। ইটাচনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগ তাই এখন এলাকার অন্যতম দৃষ্টান্ত। কম পয়সা, ছোট উদ্যোগ, অথচ এই উদ্যোগের শিক্ষামূলক মূল্য অপরিসীম।





