সেই এফআইআর-এর ভিত্তিতেই অনুব্রতকে হেফাজতে নিতে আজ সকালে আসানসোল জেলে পৌঁছয় পুলিস। অনুব্রত মণ্ডলকে ইতিমধ্য়েই দুবরাজপুর আদালতে নিয়ে আসা হয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্য়েই তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে। অনুব্রতর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা আটকাতেই পুলিসের এই তৎপরতা।
আরও পড়ুন: 'অনুব্রত এখনও বীরভূমের বাঘ', আদালতের নির্দেশে প্রতিক্রিয়া ফিরহাদ হাকিমের
advertisement
পুলিস সূত্রে খবর, দুর্গাপুরের মেজে গ্রামের বাসিন্দা শিবশঙ্কর মণ্ডল নামে এক তৃণমূল কর্মী গতকাল দুবরাজপুর থানায় এসে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই তৃণমূল কর্মীর অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু সেই কথা জানতে পেরে তাঁকে দুবরাজপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ডেকে পাঠিয়ে অনুব্রত মণ্ডল তাঁর গলা টিপে ধরেন এবং প্রাণে মারার চেষ্টা করেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই গতকাল সন্ধ্য়ায় পুলিশ অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে নতুন এফআইআর দায়ের করে। সেই এফআইআর-এর ভিত্তিতেই অনুব্রতকে চোদ্দ দিনের জন্য় নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আজ আদালতে আবেদন করতে চলেছে পুলিস।
ইডি সূত্রে খবর, অনুব্রতকে হেফাজতে নিতে পুলিসের আচমকা এই তৎপরতার বিষয়টি দিল্লির রাউস অ্য়াভিনিউ আদালতে জানানো হবে। এক বছরেরও বেশি পুরনো ঘটনায় কেন হঠাৎ পুলিস তৎপর হয়ে এফআইআর দায়ের করল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ইডি কর্তারা। প্রসঙ্গত, গতকালই দিল্লির রাউস অ্য়াভিনিউ আদালত জানিয়ে দিয়েছিল দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করতে পারবে ইডি। নির্দেশ অনুযায়ী, তিহার জেলেই রাখার কথা অনুব্রতকে। সেখানেই এই মুহূর্তে বন্দি রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী ও গরু পাচার মামলায় আর এক অভিযুক্ত সায়গল হোসেন। দু' জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরারও সম্ভাবনা রয়েছে।
বিরোধী শিবিরও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার অভিযোগ, অনুব্রতর দিল্লি যাত্রা আটকাতেই এই তৎপরতা শুরু করেছে রাজ্য় পুলিস। যদিও সেই চেষ্টা সফল হবে না বলেই মনে করেন তিনি। একই অভিযোগ করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও।
শিব ঠাকুর মণ্ডল নামে যে তৃণমূল কর্মী এই অভিযোগ করেছেন, তিনি বলেন, 'আমি যখন প্রথম পঞ্চায়েত প্রধান হই, কেষ্টদার নির্দেশে অনাস্থা ভোট করে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গত বিধানসভা ভোটের আগে আমি অন্য় দলে চলে যাওয়ার কথা ভাবি। সে কথা কোনও ভাবে কেষ্টদার কানে যায়। এর পরেই একদিন কেষ্টদা আমাকে দুবরাজপুর পার্টি অফিসে ডেকে পাঠিয়ে গলা টিপে ধরে, প্রাণে মারার চেষ্টা করে। দাদার হাতে পায়ে ধরে বাড়ি ফিরে আসি। তখন থেকেই ভেবেছিলাম সুযোগ পেলে এই অপমানের বিচার চাইব। এখন কেষ্টদা জেলে রয়েছে। তাই অভিযোগ করে প্রশাসনের থেকে যথাযথ বিচার চাইছি।'