এক্সাইড মোড়ের পরে এবার মহেশতলা। কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) পর এবার একই অমানবিকতার অভিযোগ রাজ্য পুলিশের এক অফিসারের বিরুদ্ধে। থানায় নিয়ে গিয়ে মারধরের জেরে হাসপাতালে ভর্তি মহেশতলার বাসিন্দা সুমন্ত বেরা।
কালীপুজোর রাতে মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে বচসা-হাতাহাতি। সুমন্ত বেরা নামে ওই যুবকের পরিবারের দাবি, কালীপুজোর রাতে মহেশতলায় রাস্তার উপরেই মোটকসাইকেল রেখেছিলেন মহেশতলা থানার এএসআই আবুল মারজান৷ রাস্তার উপরে মোটরসাইকেল রাখায় অনেকেরই যাতায়াতে অসুবিধে হচ্ছিল৷ তখনই সুমন্তবাবু মোটরসাইকেল সরিয়ে নেওয়ার জন্য ওই পুলিশ অফিসারকে অনুরোধ করেন৷ অভিযোগ এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আবুল মারজান নামে ওই অফিসার৷ দু' জনের মধ্যে বচসা এবং হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়৷
advertisement
আরও পড়ুন: লজ্জার কলকাতা, চোর সন্দেহে যুবকের বুকে পা সিভিক ভলান্টিয়ারের! গোটা দেশে ঘুরছে এই দৃশ্য
অভিযোগ, এর পরই ৪১ বছর বয়সি সুমন্ত বাবুকে গ্রেফতার করে থানার ভিতরেই অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ। ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার অন্তর্গত মহেশতলা থানার সাব-ইন্সপেক্টর আবুল মারজান থানার ভিতরেই হাত পা বেঁধে ওই যুবককে ব্যাপক মারধর করেন বলে অভিযোগ। আর এতেই শরীরের একাধিক জায়গায় হাড় ভেঙে যায় সুমন্তবাবুর। এর পরের দিন জামিনে ছাড়া পান ওই যুবক৷ বাড়ি ফিরে গোটা ঘটনা জানানোর পর তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়৷ তখনই জানা যায়, সুমন্তবাবুর শরীরের একাধিক জায়গার হাড় ভেঙে গিয়েছে৷
আক্রান্তের দাদা তৃণমূল নেতা তথা মহেশতলা পুরপ্রশাসক বোর্ডের সদস্য সুকান্ত বেরা। তাঁর মতে,' পুলিশের থেকে এরকম আচরণ ভাবাই যায় না। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমার ভাইকে উনি যেরকম অমানবিক ভাবে অন্যায় অত্যাচার করেছেন, তা কল্পনার বাইরে৷' আক্রান্ত যুবকের দাবি, এক্স রে করে ধরা পড়ে সুমন্তর শরীরের একাধিক হাড় ভেঙে গিয়েছে। সুমন্তর দাদা সুকান্ত বেরার অভিযোগ,' এসআইয়ের মারেই এই অবস্থা৷'
আরও পড়ুন: সিটেই পড়ে রইল 'পরিচয়পত্র', মা ফ্লাইওভারে গাড়ি থামিয়ে মরণঝাঁপ চালকের...
যদিও অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার আবুল মারজান তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন ওই যুবকের বিরুদ্ধে৷ তাঁর দাবি, সুমন্ত বেরা নামে ওই যুবকই তাঁকে লাঠি, বাঁশ দিয়ে আক্রমণ করেন। মহেশতলার বিধায়ক শাসকদলের দুলাল দাসও অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'যেভাবে বিনা অপরাধে সুমন্তকে মারধর করা হয়েছে তা অন্যায়। আমি চাইবো পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিক৷' দুলালবাবুর আরও দাবি, ওই যুবক সত্যিই পুলিশকর্মীকে মারধর করে থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল৷
যদিও ডায়মন্ডহারবারের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। নিউজ এইট্টিন বাংলার এই প্রতিবেদক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন। রবিবার রাতে এক্সাইড মোড়ে যুবককে বেধড়র মারধর করেন এক সিভিক ভলান্টিয়ার। এ নিয়ে জোর বিতর্ক হয়। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। এক্সাইডের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ঘটনাস্থল মহেশতলা।