ধৃত আফতাবউদ্দিন ঘটনার দিন ফোন করে তৃণমূল নেতার বাইক কোন পথ দিয়ে যাচ্ছে তার সম্পূর্ণ বিবরণ দেয় রফিকুল ও তার দলবলকে, দাবি পুলিশের। ঘটনার পর কুলতলির মহেশমারিতে আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিল আফতাবউদ্দিন।
এফআইআরে নাম ছিল না খুনে অভিযুক্ত পলাতক বসিরের ভাই আফতাবুদ্দিনের। রফিকুলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় আফতাবউদ্দীনের। ক্যানিংয়ে ধর্মতলা গ্রামের বাসিন্দা আফতাবুদ্দিন। রফিকুলের সঙ্গে আফতাবুদ্দিন দিন তিনেক আগে ঠান্ডা মাথায় খুনের পরিকল্পনা করে। খুনের ষড়যন্ত্রে সামিল আফতাবুদ্দিন। ধৃতকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশের দাবি, ঘটনার দিন যে নিহত তৃণমূল নেতা ওই রাস্তা দিয়ে যাবেন, তা রফিকুলকে জানিয়েছিল আফতাবুদ্দিনই৷
advertisement
আরও পড়ুন: বর্ধমানে পরপর ৩ জনের মৃত্যু, কারণ কি বিষমদ? চরম আতঙ্কে গোটা শহর
কীভাবে খুনের ষড়যন্ত্রে সামিল আফতাবউদ্দীন? পুলিশ সূত্রে খবর, রফিকুল সহ চার জন দুষ্কৃতী বাইক করে আসে। প্রথমে চায়ের দোকানে অপেক্ষা করে। এরপর চাষের জমিতে নেমে অপেক্ষা করে। যেন দেখে মনে হয় ক্ষেতের মধ্যে চাষ করছে তারা। এর পর আফতাবউদ্দিন ফোন করে রফিকুল ও তার দলবলকে জানায় যে স্বপনের বাইক আসছে। জানতে পেরে দুষ্কৃতীরা তখনই পথ আটকায়।
পুলিশের দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা গিয়েছে, রফিকুল স্বপনকে লক্ষ্য করে গুলি করে , এমনকি এলোপাথারি কোপানো হয় মৃত্যু নিশ্চিতের জন্য। বাকি দুই নেতা ভুত নাথ প্রামানিক ও ঝন্টু হালদার পালাতে যান জমির ক্ষেত দিয়ে। তখন বাকি দুষ্কৃতীরা ওই দুজনকে এলোপাথারি কুপিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করে। পুলিশ সূত্রে খবর, গুলি করে কোপানোর পর তিন জন ক্ষেত দিয়ে পালায় ও একজন দুষ্কৃতী রক্ত মাখা জামা পরেই বাইক নিয়ে হেড়োভাঙার দিকে যায়।
আরও পড়ুন: রেল ব্রিজের উপরে হঠাৎ চলে এল ট্রেন, কংসাবতীতে গিয়ে পড়লেন রেলকর্মী
ক্যানিংয়ে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ও দুই কর্মী খুনে মূল অভিযুক্ত রফিকুল গ্রামে এলে পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাজি পুলিশকে খবর দিয়ে দিত । যার ফলে গ্রামে ঝটিকা সফরে এলেও বেশিক্ষন থাকার উপায় ছিল না রফিকুলের । রফিকুল জেল খাটা আসামী। জেল থেকে ছাড়া পেয়েও গ্রামে রাজত্ব চালাতে পারছিল না। ফলে স্বপনের উপর আক্রোশ ছিল তার। তবে রাগের কারণের সূত্রপাত মাস নয়েক আগে।
স্বপনের ঘনিষ্ঠ বাদল নামে তৃণমূল কর্মীকে রফিকুল নামে ওই দুষ্কৃতী ও তার দলবল কুপিয়েছিল। কারণ এই দুষ্কৃতীরা ওই একই গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগ, রফিকুল এলাকায় তোলাবাজি, এলাকা দখল করতো। তখন প্রতিবাদ করেন বাদল।সেই জন্য বছর খানেক আগে বাদলকে খুনের চেষ্টা করে রফিকুল।কিন্তু তখন স্বপন বাদলকে বাঁচান। আশ্রয় দেন, ওষুধ দেন। ফলে স্বপনকে টার্গেট করে মূল অভিযুক্ত জেলে খাটা আসামি রফিকুল।
রফিকুল আগেই স্বপনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ৷ স্বপনের সঙ্গে ব্যক্তিগত আক্রোশ এবং পুরনো শত্রুতা ছিল তাঁর।সে কারণে নৃশংস ভাবে হত্যা করল স্বপনকে। প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ায় বুথ সভাপতি ঝন্টু হালদার, যুব বুথ সভাপতি ভূতনাথ প্রামাণিককেও হত্যা করে রফিকুল ও তার দলবল।
পুলিশ সূত্রে খবর, রফিকুলের বিরুদ্ধে এর আগে মাদক পাচার, মারধর, ঝামেলা, খুনের চেষ্টার মামলা রয়েছে ক্যানিং থানায়। অভিযুক্ত রফিকুল জেল খাটা আসামী। আফতাবউদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব রফিকুলের। আফতাবকে জেরা করে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সহ বাকিদের হদিস মিলতে পারে।
