গ্রামটির পাশে রয়েছে দুটি প্রাচীন পুকুর—রামসাগর ও সীতাসাগর। কথিত আছে, এই পুকুরগুলির ইতিহাসও কৃত্তিবাস ও রামকথার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। বহু প্রাচীনকালে এই এলাকার জমিদার ছিলেন দুর্গাপ্রসাদ ব্যানার্জি। তাঁর আমলেই স্থানটি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। স্থানীয় প্রবীণদের মতে, এই জায়গায় এর আগেও একটি রাম মন্দির ছিল, যা সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যায়।
advertisement
তবে সাম্প্রতিক কালে প্রোমোটারদের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছিল এই সম্পত্তির ওপর। এলাকার জমি হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু গ্রামবাসীরা একজোট হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং আত্মবলেই আজ পুনরায় শুরু হল রাম মন্দির নির্মাণের স্বপ্ন।
মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে গ্রামবাসীদের ভিড় উপচে পড়ে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে পুজো-অর্চনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে তোলেন। স্থানীয়রা জানান, “এই মন্দির শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। কৃত্তিবাসের জন্মভূমিতে রাম মন্দির গড়ে ওঠা আমাদের গৌরবের বিষয়।” তারা দেখালেন সে সময়কার ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাপ্ত করি মুদ্রা এমনকি মন্দিরের চূড়ার অংশবিশেষ। তবে প্রবীণরা অনেকেই জানাচ্ছেন ধ্বংসাবশেষ তারা দেখলেও মূল মন্দির দেখেছেন তাদের ঠাকুর দাদা কিংবা তারও পূর্বপুরুষ।
এই উপলক্ষে এলাকায় উৎসবের আবহ তৈরি হয়। গ্রামবাসীরা আশা করছেন, খুব শিগগিরই পূর্ণ রূপে নির্মিত হবে মন্দিরটি এবং এটি কেবল ভক্তদের জন্য নয়, পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবেও নতুন পরিচিতি পাবে।
এই উদ্যোগে গ্রামবাসীদের ঐক্য, আস্থা ও ধর্মীয় ভক্তি আবারও প্রমাণ করল—অর্থলোভের বিরুদ্ধে সমাজ যখন একজোট হয়, তখন ঐতিহ্য ও বিশ্বাসই জয়ী হয়। রাম মন্দির নির্মাণ তাই আজ শুধুই একটি স্থাপত্য নয়, এটি ফুলিয়ার মানুষের আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠছে।