প্রসঙ্গত, রাজ্যের ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের ওপর জোর দিয়েছিলেন। পাশাপাশি মহিলাদের স্বনির্ভরতার ওপরেও জোর দিয়েছিলেন তিনি। ২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রী কচুরিপানা ও কাশফুল দিয়ে জিনিসপত্র তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর সেই বক্তব্যে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের বন্যা বয়ে যায়। বিরোধীরা নানান কটাক্ষ করে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সেই পরামর্শ মতো বর্তমানে প্রত্যন্ত গ্রামে কচুরিপানা দিয়ে নানান হস্তশিল্প গড়ে স্বনির্ভর হচ্ছেন মহিলা থেকে পুরুষ। তৈরি হচ্ছে ফুলদানি, ব্যাগ, ফুলের সাজি, ফল রাখার পাত্র, শৌখিন আয়না, পাপোস, জুতো সহ আরও নানান সৌখিন জিনিসপত্র।
advertisement
আরও পড়ুন : রাখিতে নতুন ট্রেন্ড! ভাইবোনের ভালবাসায় থাকুক টেরাকোটার ছোঁয়া
এই কচুরিপানা দিয়ে নজির গড়লেন হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৩০ জন মহিলা। তাঁরা পাণ্ডবেশ্বর ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় কচুরিপানাকে কাজে লাগিয়ে রংবেরঙের রাখি তৈরি করে আয়ের নতুন দিশা দেখালেন। কচুরিপানা দিয়ে নানান সামগ্রী তৈরির জন্য একটি সংস্থা তাঁদের সাত দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭০০ রাখির বরাত মেলে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত থেকেও মেলে ৫০০ রাখির বরাত। অত্যন্ত ন্যুনতম দামে বিক্রি হচ্ছে এই পরিবেশবান্ধব রাখি।
আরও পড়ুন : বাঙালির আবেগ, স্বাধীনতা দিবসেই উদ্বোধন নেতাজির বিশাল মূর্তি! কোথায় হচ্ছে জানেন?
প্রতি রাখি পিছু তাঁরা দাম নিচ্ছেন মাত্র ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা আলপনা মন্ডল জানান, এলাকার জলাশয় থেকে তাঁরা কচুরিপানা সংগ্রহ করেছেন। তারপর ওই কচুরিপানা রোদে শুকিয়ে নিয়েছেন। ওই শুকনো কচুরিপানায় আয়রনের হিট দিয়ে সোজা ও চ্যাপ্টা করেছেন। এর পর সেগুলি নানান নকশা করে কেটে নিয়ে রাখি তৈরি করেছেন। এছাড়া রাখি তৈরি করতে ব্যবহার করেছেন কাগজ, সাবুদানার আঠা, চুমকি, রং, বার্নিশ সহ আরও নানান উপকরণ।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দাবি, এই পরিবেশবান্ধব রাখি তৈরি করতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত কচুরিপানা কিনতে হয়নি। এতে রাখি তৈরি করতে খরচ বেশ কিছুটা কম হয়েছে। হরিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান আশা মন্ডল ও উপপ্রধান গোপীনাথ নাগ জানান, মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়েই তাঁরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আয়ের দিশা দেখিয়েছেন।