জমিদারিত্ব হারানর পর ধীরে ধীরে অবলুপ্তির পথে তাদের বসতভিটে। সামান্য অক্ষত থাকলেও সেদিনের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। টেরাকোটার আদলে নির্মিত মন্দির। পুজোর ছুটিতে ঘুরে দেখুন এই জমিদার বাড়ি, দেখুন প্রায় ১৪০ বছরের পুরোনো পুজো।
advertisement
হাতির পিঠে চাপিয়ে সসম্মানে আনা হত ব্রাহ্মণকে। কামান দেগে দেবীর বোধন হত নারায়ণগড়ের গড় কৃষ্ণপুর গ্রামের দেব জমিদার বাড়ির পুজোয়। তবে কালক্রমে জমিদারি হারিয়ে ১৯৭১ সালে প্রতিমা পুজো বন্ধ হয়ে যায়। চলত ঘট পুজো। এবছর কুশমুড়ির দেব জমিদার পরিবারে ফের শুরু হচ্ছে প্রতিমা পুজো। যার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। খুশি পরিবারের লোকজন থেকে স্থানীয়রা। দীর্ঘ ৫৪ বছর পর প্রতিমা পুজোয় ফিরছে দেব পরিবার।
শুধু তাই নয়, পুজোর দিনে ঘুরে দেখুন ভগ্নপ্রায় জমিদার বাড়ি। জানা যায়, ১৭৫০-১৭৫১ সাল নাগাদ রাজস্থান থেকে বাংলায় এসেছিল দেও পরিবার। বাস করতেন নারায়ণগড়ের কৃষ্ণপুর গ্রামে। পরবর্তী সময়ে জমিদারি লাভ করেন তারা। তৎকালীন সময়ে এলাকায় প্রায় ৫০-টি মৌজার অধিকারসত্ব লাভ করেছিল পরিবারটি।
ইংরেজ সরকার এই পরিবারকে দিয়েছিল চৌধুরী উপাধি। দিয়েছিল কামান। সেই কামান দেগে ১৮৮৪ সালে রাধামোহন দেব পুজো শুরু করেন। গড়ে তোলেন কুল দেবতা ব্রজরাজজিউর মন্দির। ডাকের সাজে দুর্গা প্রতিমার বোধন হত কামান দেগে। জমিদার বাড়ি থেকে হাতি যেত পুরোহিতকে আনতে। হাতির পিঠে চড়ে পুরোহিত আসতেন জমিদার বাড়িতে দেবী দুর্গার পুজো আরাধনায়।
জাঁকজমকপূর্ণ এই পুজোর পাঁচদিন প্রজাদের অন্নভোগ বিতরণ করা হত। জমিদার বাড়ির মূল ফটকে পুজোর কয়েকটা দিন বসত নহবত। কালের নিয়মে জমিদারি যায় ধীরে ধীরে। ১৯৭১ সাল থেকে মূর্তি পুজো বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ঘটের উপর পিতলের মূর্তি স্থাপন করে চলত পুজো। তবে এবার থেকে ফের ফিরছে পুরোনো ঐতিহ্য। ফের পুজো হবে প্রতিমায়। তবে, এবার পুজোতে আপনার ডেস্টিনেশন হোক দেব পরিবারের এই পুজোর আসর ও ভগ্নপ্রায় জমিদার বাড়ি।