কোনও মাছের বাজারে কোনো চিত্র প্রদর্শনী হতে পারে সেই ভাবনাটা মাথায় আসে শ্রদ্ধেয় শিল্পী হিরন মিত্র ও হাওড়ার জোনাকির অভিভাবক প্রখ্যাত অভিনেতা বিশ্বজিৎ দাসের মাথা থেকে। ‘আর্ট ইন এভরিওয়ান’ নামক প্রদর্শনীতে ছবি থাকবে মাছবিক্রেতাদের সাজানো পসরার ঠিক উপরে। মেঝেতে রুই, কাতলা, ইলিশ, বাটা, চিংড়ি, ভেটকি মাছ থাকবে। তার ঠিক উপরেই ঝুলবে ক্যানভাস। বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ছবি জায়গা পায় প্রদর্শনীতে। যার সৃষ্টি হয়েছে মাছবাজারের কোলাহলের কথা ভাবনায় রেখেই। প্রদর্শনী চলবে ২২ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা অবধি । তিনদিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর সঙ্গে থাকছে নাটক, নাচ-গান, কবিতা পাঠ, প্রাসঙ্গিক আলোচনা, ফটোগ্রাফি, লিটল ম্যাগাজিন।
advertisement
আরও পড়ুন: পুলিশের ডাকে একদিনে সাড়া দিল একসঙ্গে কুড়ি হাজার ছেলেমেয়ে! অনন্য উদ্যোগ
সন্ধ্যায় যে হেতু বাজারে বেশি ভিড় থাকে না আর অল্প দোকান খোলে, তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। চিত্রশিল্পী বিশ্বজিৎ দাস বলছিলেন, হিরণদা চেয়েছিলেন ধাবায় একটা প্রদর্শনী করবেন। পরে অন্য কোনও স্পেস খোঁজা হচ্ছিল। আচমকাই আমার মাথায় আসে এই বাজারের কথা। আর তারপর সাফল্যের হাতছানি। হাওড়ার কালীবাবুর বাজারের মাছ বাজারে ‘আর্ট ইন এভরি ওয়ান’ উদ্যোগের দ্বিতীয় সংস্করণ সফলের পর এই নিয়ে তৃতীয়বার হতে চলেছে এই প্রদর্শনী, যা নিয়ে আশাবাদী সকলেই।
আরও পড়ুন: মাটি ছুঁলেই হয়ে যায় পাথর! অসামান্য দক্ষতা শিক্ষকের, বানান অজন্তা ইলোরা থেকে অনেককিছু
হাওড়া ময়দানের কাছেই কালীবাবুর বাজার। বয়স নয়-নয় করে কমপক্ষে আড়াইশো বছর। স্থানীয় জমিদার বংশের কালীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বাজারটি তৈরি করেছিলেন। ভিতরে গৃহস্থালির সামগ্রী থেকে সব্জি বা মাছ সবেরই আলাদা আলাদা বাজার রয়েছে। এখন ১৩১ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। তাঁদেরই সংগঠন ‘কালীবাবুর বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি’ তৈরি হয় ১৮৯১ সালে। শতাব্দী প্রাচীন সেই সমিতিই এই প্রদর্শনী আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা।
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন“
মৎস্য বিক্রেতা সঞ্জয় মান্না জানান,ক্রেতারা আসছেন। যারা আর্ট বোঝেন তারা অনেকেই এই প্রদর্শনী দেখছেন,উৎসাহও পাচ্ছেন। তিন পুরুষের মৎস্য বিক্রেতা সুকুমার মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া যা আর্ট গ্যালারিতে গিয়ে দেখতে হয়, তেমন চিত্র প্রদর্শনী যদি মাছের বাজারে মাছ বিক্রি করতে করতে দেখতে পাই তাহলে তা মন্দ লাগে না, বরং ক্রেতারাও তা চোখ ঘুরিয়ে দেখেন।
রাকেশ মাইতি