জয়দেব মুনিয়ার জীবনটা যেন রূপকথার গল্প। খুব ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারান জয়দেব। আত্মীয় ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সহানুভূতি পাননি কোনওদিন। ফলে ছোটবেলা থেকেই নিজের পেটের ক্ষিদে মেটাতে পথে পথে ভিক্ষা করে বেড়াতেন। কিছুটা বড় হতেই ভাগ্য বদলাতে নন্দীগ্রাম থেকে পাড়ি দেন কলকাতায়। কলকাতায় এসে অন্যের বাড়িতে চাকরের কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুনঃ ঘনিয়েছে নিম্নচাপ! তাণ্ডব চলছে সমুদ্রে! দিঘায় সতর্ক প্রশাসন, ভয়ঙ্কর ভিডিও দেখুন…
advertisement
কিন্তু তাতে পেটে খিদে মিটলেও মনে সন্তুষ্টি ছিল না। এক মাছ বিক্রেতার সঙ্গে ভাব হয়। তার মাছ আড়ত থেকে এনে দিত। এতে কিছু টাকা মিলত, সেই থেকে মাছ বিক্রির বিষয় একটু একটু জানতে পারেন। আঠাশ টাকা নিয়ে মাছ ব্যবসা শুরু করেন। তারপর জয়দেব মুনিয়ানকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
কলকাতা থেকে নন্দীগ্রামে ফিরে যান। নন্দীগ্রাম সোনাচূড়া গ্রামে এসে মাছ ফেরিওয়ালা হয়ে মাছের ব্যবসা চালিয়ে জমিজমা কেনা ও বাড়ি তৈরি করেন, সংসারী হন। মাছ বিক্রির কোনও দোকান না করতে পারলেও, ব্লক মৎস্য দফতরের সহায়তায় প্রধান মন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় মাছ ফেরি করার জন্য মোটর সাইকেল-সহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাছের বাক্স করেন।
আরও পড়ুনঃ দুপুরেই নামছে অন্ধকার, নিম্নচাপের জেরে কোন কোন জেলায় কাঁপিয়ে বৃষ্টি? রইল পূর্বাভাস
জয়দেব মুনিয়ান জানান, মাছ বিক্রি থেকেই তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিকের সহযোগিতায় ব্যবসায় আরও লাভবান হয়েছেন। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্য বিভাগ মাছকে কেন্দ্র করে সকল প্রকার উদ্যোগ গ্রহণে উৎসাহিত করে চলছেন। মাছ চাষি, মাছ বিক্রেতা, মাছ আহরনকারীরা যেমন উৎসাহীত হচ্ছেন, তেমনই অনেক মানুষ মাছ কেন্দ্র করে জীবিকা গ্রহনের নতুন দিশা পাচ্ছে।
সম্প্রতি নন্দীগ্রাম-১ ব্লক মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে মাছ ফেরিওয়ালাদের জন্য প্রকল্প রূপায়ন হচ্ছে। এলাকার মৎস্য উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সুমন সাহু জানান, “সামান্য পুঁজি নিয়েও মাছ চাষ বা ব্যাবসায় নেমে সাফল্য অর্জন করা যায়, জয়দেবের মতো মাছ বিক্রেতা অনেকের কাছে উৎসাহ দেবে, মাছ কেন্দ্রীক উপার্জনে মৎস্য দফতরের প্রকল্প রয়েছে এই সুবিধা সকলেই গ্রহণ করতে পারেন।”
Saikat Shee