গ্রামের বহু মহিলাই আজও নির্দিষ্ট উপার্জনের পথ খুঁজে পান না। বাড়ির গণ্ডি ছাড়িয়ে তাঁরা যেন আরও একটু সামনে এগিয়ে যেতে পারেন, সেই লক্ষ্যে মাছের আঁশ থেকে গয়না তৈরির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে খেজুরি ব্লক প্রশাসন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নতুন রোজগারের পথ দেখাতে এই প্রকল্প নিঃসন্দেহে এক দৃষ্টান্ত।
জলে থাকে না এই ‘মাছ’! জল স্পর্শ না করেই পার হয়ে যায় মরুভূমি…একের পর এক দেশ! জানেন কোন মাছ?
advertisement
আপনার কি ক্যানসার হবে? ৩ বছর আগেই বুঝে যেতে পারেন! নতুন এই আবিষ্কার শনাক্ত করে দেবে মারণরোগ
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা—লাগাতার হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ চলছে। মাছের আঁশ সংগ্রহ করা, পরিষ্কার করা, প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম রঙে রাঙিয়ে তা দিয়ে কানের দুল, হার, ব্রেসলেট, কড়ি, এমনকি অলঙ্কার সেট তৈরি করা—সবটাই শেখানো হচ্ছে ধাপে ধাপে। রঙের ছোঁয়ায় আঁশের উপর ফুটে উঠছে শৈল্পিকতা।
প্রশিক্ষকদের মতে, এই গয়না শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও হালকা। বাজারে এই ধরনের গয়নার চাহিদাও ক্রমেই বাড়ছে।
গয়না তৈরি করলেই তো চলবে না, তা বিক্রি করতে পারলেই হবে বাস্তব লাভ। সে কথা মাথায় রেখেই ব্লক প্রশাসন নিশ্চিত করছে, মহিলারা যেন সরকারি মেলা ও প্রদর্শনীতে অংশ নিতে পারেন। বিশেষ করে ‘বিশ্ব বাংলা’ স্টলে এই গয়না বিক্রির জন্য সরকারের তরফে মিলছে সম্পূর্ণ সহযোগিতা। এতে সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছতে পারছেন মহিলারা, নিজেদের তৈরি গয়নার সঠিক দামও পাচ্ছেন হাতে-হাতে।
খুশি মহিলারা। কেউ প্রথমবার হাতে তুলেছেন তুলি, কেউ আঁশ ছুঁয়ে বুঝেছেন—এও হতে পারে জীবনের মোড় ঘোরানো উপকরণ। তাঁদের কথায়, “এমন কিছু আগে ভাবিনি। আজ আমরা শুধু গয়না বানাচ্ছি না, নিজেরা গড়ে তুলছি নতুন পরিচয়।”
খেজুরি বিডিও জানিয়েছেন, “এই প্রকল্পের লক্ষ্য শুধুই রোজগার নয়, মহিলাদের ক্ষমতায়ন। আমরা চাই, গ্রামের প্রতিটি নারী বুঝুক—তাঁর হাতেই রয়েছে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার চাবিকাঠি।”
এই উদ্যোগ দেখিয়ে দিল, প্রকৃত স্বনির্ভরতা মানে শুধু একটা কাজ পাওয়া নয়, বরং নিজের মেধা ও কল্পনাকে কাজে লাগিয়ে সমাজের মূল স্রোতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়া। খেজুরির মহিলারা সেই পথেই হেঁটে দিচ্ছেন নতুন দৃষ্টান্ত।