জঙ্গিপুর সাইবার ক্রাইমের কাছে কয়েকদিন আগে সুতি থানার নাজিরপুর এলাকার বাসিন্দা বিপদ কুমার দাস নামে এক ব্যক্তি ৫ লক্ষ টাকা অনলাইন জালিয়াতির অভিযোগ করেন। ওই ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে অনলাইন জালিয়াতি মামলায় জঙ্গিপুর সাইবার সেল তদন্তে নামলে তাদের হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যবহার করে একটি বেসরকারি ডেলিভারি সংস্থা থেকে একাধিক ভুয়ো ঠিকানায় বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির মোবাইল কেনা হয়। অনলাইনে বিক্রয় হওয়া মোবাইলগুলির imei নম্বর ট্র্যাকিং করে জঙ্গিপুর সাইবার সেল জানতে পারে মোবাইলগুলি কোচবিহারে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই তদন্ত নেমে তিনটি দোকানের নাম উঠে আসে জঙ্গিপুর সাইবার ক্রাইমের কাছে।
advertisement
জানা গিয়েছে, অনলাইনে বিক্রি হওয়া মোবাইলগুলি কম পয়সার বিনিময়ে এই দোকানগুলি কিনে নেয় এবং পরবর্তীতে নতুন মোবাইলের দামে ক্রেতাদের হাতে বিক্রি করা হত। জঙ্গিপুর সাইবার সেল কোচবিহারের তিনটি মোবাইলের দোকানে হানা দেয়। এবং সেখান থেকে বিপুল পরিমাণে নতুন মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে।
জঙ্গিপুর সাইবার সেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, কোচবিহারের বিশিষ্ট এই তিনটি দোকানদার অ্যামাজন জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত আছে। কারণ এই দোকানদার গুলি অল্প টাকাতে নতুন মোবাইল গুলি জালিয়াতদের কাছ থেকে ক্রয় করতেন। পরবর্তীতে সেগুলি তাদের নিজেদের দোকান থেকেই নতুন মোবাইল এর দামে ক্রেতাদের বিক্রি করতেন।
বুধবার জঙ্গিপুর পুলিশ সুপার অমিত কুমার সাউ জানান, অনলাইন জালিয়াতি মামলায় তদন্তে নেমে জঙ্গিপুর সাইবার পুলিশ কোচবিহার থেকে তিনজন মোবাইলে দোকানদার গ্রেফতার করা হয়েছে।ধৃত তিন দোকানদার এর নাম সন্দীপ গুপ্তা বয়স ৩৬, দোকান কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার নিউ দাবরি রোড, অমিত গুপ্তা বয়স ৪৮, দোকান কোতোয়ালি থানার সিলভার জুবলি রোড, সন্তোষ গুপ্তা বয়স ৪১ দোকান কোতোয়ালির থানার অন্তর্গত পান্থশালা রোড।
তিনজনকে জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন রেখে তোলা হয়েছিল তাদের তিন দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন জঙ্গিপুর মহকুমা আদালত। এর পেছনে একটি বড় চক্র কাজ করছে। ধৃতদের কাছ থেকে ৫৭ টি নামিদামি কোম্পানির নতুন মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও বেশ কিছু তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেই আমরা আশা রাখছি। জঙ্গিপুর সাইবার পুলিশের এটি একটি বড় সাফল্য।
আরও পড়ুন- রবিবার ট্রেনের টিকিট কাটা ছিল, সোমবার কৃষ্ণনগরে দেশরাজ! কোথায় গা ঢাকা দিল ঈশিতার খুনি?
মঙ্গলবার জঙ্গিপুর জেলা সাইবার ক্রাইম পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ৬৭টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। দুস্কৃতীদের মূল উদ্দেশ্য বিভিন্ন নাম ব্যবহার করে ডেলিভারি সংস্থায় মোবাইল বুকিং করা হতো। এবং যা ভুয়ো নাম ব্যবহার করে দোকানে বিক্রি করা হতো। এই ভাবে মোট ৬৭টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তিনজন ছাড়াও আর একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জঙ্গিপুর জেলাতে এত বড় মোবাইল চক্রের ঘটনা এই প্রথম। তবে অনলাইন মোবাইল কেনার আগে সমস্ত রকম সব কিছু বিবেচনা করতে বলা হয় গ্রাহকদের।