পুরী যাওয়ার জন্য জগন্নাথ সড়কের দুপাশেই ছিল একাধিক হিন্দু মন্দির। ইতিহাস বলে, পাঠান সেনাপতি কালাপাহাড় ধ্বংসলীলা চালায় সেই মন্দিরে, যার ফলে একাধিক প্রাচীন ঐতিহ্য বিনষ্ট হয়েছে। পরবর্তীতে নানা ভাবে পাওয়া গেছে ভগ্ন, কিংবা গোটা পাথরের মূর্তি। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে এমনই উদ্ধার হওয়া একাধিক মূর্তির অবস্থান গাছের নীচেই।
আরও পড়ুন: স্বপ্নে যদি ‘এই’ তিনটি পাখি দেখেন, বদলে যাবে আপনার জীবন! পাল্টে যাবে ভাগ্য, কোন তিন পাখি জানেন?
advertisement
এমনই গাছের তলায় অসংখ্য মূর্তির সমাবেশ রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য দাঁতনের কাকরাজিতে রেবন্ত মূর্তি।যা নাকি পশ্চিমবঙ্গের আর কোথাও পাওয়া যায়নি বলে মত গবেষকদের। শুধু তাই নয়, আকার আকৃতি এবং ভাস্কর্যের দিক থেকে অত্যন্ত মূল্যবান এই মূর্তিগুলো। বর্তমানে গাছের নীচে থাকা এই মূর্তিগুলিকে সাধারণ মানুষ দেবতা জ্ঞানে পুজো করলেও এই মূর্তিগুলোকে ঘিরে রয়েছে অগাধ ইতিহাস। স্থানীয় পুকুর থেকে পাওয়া এই মূর্তিগুলো বহন করে ইতিহাসের নানা কাহিনীকে। অনেকেই এই মূর্তিকে সূর্য বললেও মূর্তিটি তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র রেবন্তের। তা নিশ্চিত করে বলেছেন পুরাতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরা। আবার সূর্য মূর্তিও বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া গেছে।দাঁতন ১ ব্লকের মনোহরপুর পঞ্চায়েতের কাকরাজিত গ্রামে চৈতন্য মহাপ্রভুর মন্দিরের কিছুটা দূরে অশত্থগাছের নীচে বেশ কয়েকটি মূর্তি রয়েছে।
ইতিহাস গবেষক সন্তু জানা বলেন, সবকটি ভগ্ন অবস্থায়। একটি সিংহ মূর্তি, একটি আমলক ও বিভিন্ন আকৃতির পাথরের মাঝেই আছে দৈর্ঘ্যে ৪ ফুট ২ ইঞ্চি ও প্রস্থে ২ ফুটের এই মূর্তিটি। স্থানীয়রা সূর্য দেবতা হিসেবেই নিত্য পুজো করেন। এখানে অনেক মূর্তি খোলা আকাশের নীচে গাছের তলায় অবস্থিত। এলাকার কুণ্ডপুকুর নামে একটি দিঘি খননের সময় বেশ কয়েকটি মূর্তি উত্থিত হয়। ইতিহাস গবেষকরা মনে করেন, গাছের তলায় অযত্নে পড়ে থাকা ঘোড়ার পিঠে আসীন মূর্তিটি রেবন্তের। যা একেবারেই দুর্লভ।
এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মূর্তি পশ্চিমবাংলার আর কোথাও পাওয়া যায়নি বলেই মত গবেষকদের।শুধু মূর্তি নয়, কাকরাজিতে আছে একটি বড় আমলক ও একটি সিংহ মূর্তি সেই অনুমানকে শিলমোহর দেয়।তবে দৈনন্দিন ভক্তি ও মানুষের আবেগে জড়িয়ে ইতিহাসের নিদর্শন। এসবের মাঝে উল্লেখযোগ্য রেবন্ত মূর্তি। ইতিহাস গবেষকেরা মনে করছেন সংরক্ষিত হোক এই মূর্তিগুলো। তা হলে ইতিহাস আরও স্পষ্ট ধরা দেবে আগামী প্রজন্মের কাছে।
— রঞ্জন চন্দ