মূলত ধর্মীয় বা পুরাণ কাহিনীর আধারে তৈরি করা প্রতিটি মূর্তিতেই চোখে পড়ে শিল্পীর স্বভাবসিদ্ধ নান্দনিকতার ছাপ। এই গ্রামে ভাস্কর সম্প্রদায়ের শিল্পীদের হাতেখড়িই হয় ছেনি, বাটালি দিয়ে পুতুল তৈরির মাধ্যমে।
বর্তমানে এই গ্রামে প্রায় ৪০টিরও বেশি পরিবার যুক্ত রয়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে। গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়ে, সারি সারি সাজানো কাঠ আর সেই সঙ্গে ভেসে আসে নিরন্তর কাঠ খোদাইয়ের শব্দ। এই বিষয়ে শিল্পী গৌতম ভাস্কর জানিয়েছেন, “আমাদের এখানে বেশিরভাগ কাঠের কাজই হয়। সারা বছর আমরা এই কাজ করি। দূর দূরান্ত থেকে আমাদের গ্রামে পর্যটকরা ঘুরতে আসেন। বিভিন্ন জিনিস ঘুরে দেখেন এবং কিনে নিয়ে যান।”
advertisement
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সাধের পদ্মা সেতু, সেখানেও ভারতের থেকে ‘চুরি’! লজ্জা লজ্জা! এ ঘটনা শুনে জাস্ট চমকে যাবেন
উল্লেখ্য কেবলমাত্র পুরুষরাই নয়, গ্রামের গৃহবধূরাও সমান তালে হাত মেলান এই কাজে। গ্রামের এই শিল্পের খ্যাতি কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই নয়, সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে রয়েছে শিল্পীদের হাতের কাজ। আজকের এই নতুন গ্রামের খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছে গিয়েছে। তবে এই নতুনগ্রাম একসময় ছিল গভীর জঙ্গলে ঢাকা। একদল কাঠুরিয়া কাঠ কাটতে এসে গড়ে তোলেন এই গ্রাম। পরবর্তীতে নাম রাখা হয় নতুনগ্রাম। তবে এখানে প্রথমে পাথরের মূর্তি তৈরি হলেও, পরে শিল্পীরা এই কাঠের শিল্পকে আপন করে নেন। এই গ্রামের কাঠের পেঁচা, জগন্নাথ মূর্তির সবথেকে বেশি কদর রয়েছে।
সেই সব জিনিস বহুবার বিদেশেও পাড়ি দিয়েছে এবং এখনও যায়। তবে শিল্পীরা শুধু কাঠের পুতুলে আর সীমাবদ্ধ নেই। এখন কাঠের সমস্তরকম আধুনিক জিনিসও তৈরি হয় এই গ্রামে। সেইসব জিনিসের সারাবছর চাহিদা থাকে তুঙ্গে। অনলাইন মাধ্যমেও বিক্রি বেড়েছে বর্তমানে। বিদেশ থেকেও পর্যটকরা এই গ্রামে ঘুরতে আসেন। থাকার জন্য গ্রামে গেস্ট হাউসের ব্যবস্থাও রয়েছে। শীতের মরশুমে একদিনের জন্য সময় কাটাতে যেতে পারেন সকলেই।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী