বৃহস্পতিবার সেই মামলার জমা পড়া নথি দেখে বিচারপতি অমৃতা সিনহা মমতাবালার সেই অনুমতি বাতিল করে দেন। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ১৯৭৩ সালে রাজ্য পঞ্চায়েত আইন আসার পর ১৯৬৩ সালের জেলা পরিষদ আইন অবলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তার পরেও জেলা পরিষদ কি ভাবে পুরনো আইন দেখিয়ে একপক্ষকে অনুমতি দিয়েছে? একই সঙ্গে নতুন করে দু’পক্ষকে আবেদন করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
advertisement
১৯ মার্চ এর মধ্যে আবেদন বিবেচনা করে নতুন করে অনুমতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পরিষদকে। এদিনের রায় প্রসঙ্গে ঠাকুরবাড়ির অন্যতম সদস্য তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জানান, আদালতের তরফ থেকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা সঠিক। এই মেলা কারা করতে পারবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
মেলা পরিবারের উত্তরসুরি অর্থাৎ ঠাকুরের যারা বংশধর তারাই চালনা করতে পারে। বাইরের কোন ব্যক্তি দ্বারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তা পরিচালনা হওয়া উচিত নয় বলেই জানান শান্তনু ঠাকুর। রাজ্যের শাসক দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে, তিনি বলেন মতুয়াদের ঝান্ডা নিশান ধরে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে পূর্বের যে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল জেলা পরিষদ-সহ সরকারি দফতরের তরফে, তা বাতিল হল।
আগামীতে এই মেলা পরিচালনার অধিকার কার হাতে থাকবে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার হয়ে সেই বিচারের উপর আদালত রায় দেবে বলেই মনে করেন ঠাকুরবাড়ির এই অন্যতম সদস্য। এদিন শান্তনু ঠাকুর আরও জানান, ২০১৪ সাল পর্যন্ত অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের পরিচালনায় বারুনি মেলা ঠাকুরনগরে হয়ে আসলেও। তারপর থেকেই মতুয়া মহাসংঘের নামে মমতা বালা ঠাকুর তৈরি হওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা মেলার অনুমতি পাচ্ছে। হঠাৎ করে কেন তারা এভাবে অনুমতি পাচ্ছে সে বিষয়টিও আদালতে আসা উচিত বলেই মনে করেন শান্তনু।
বর্তমান রাজ্য সরকার ও জেলা পরিষদ মনোপলি তৈরি করে মতুয়া ঠাকুর বাড়ির অন্যতম সদস্য মমতা বালা ঠাকুরের হাত শক্ত করতে চাইছে, মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের মানুষের ভোট ব্যাঙ্ককে তারা পকেটে নিতে চাইছে হলেও অভিযোগ তোলেন শান্তনু ঠাকুর। আগামী ১৯ তারিখে দূর হবে বিভ্রান্তি, বহু মতুয়া ভক্তই ঠাকুরবাড়ির দু’তরফের এই ভাগাভাগিতে বিড়ম্বনায় পড়েন, তাও এবার মিটবে বলেই আশা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ ঠাকুরবাড়ির অন্যতম সদস্য শান্তনু ঠাকুরের।
যদিও এ ব্যাপারে মমতাবালা ঠাকুর জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁর এখনও কিছু জানা নেই, তাঁর কাছে এখনও কোনও তথ্য আসেনি, তাই এই বিষয়ে কিছুই বলতে পারবেন না। তিনি এখন দিল্লিতে আছেন। ফিরে সবকিছু জেনে বলতে পারবেন। তবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের তরফে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
Rudra Narayan Roy