মা ও অন্য সদস্যরা তখন প্রাণ বাঁচিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গেলেও, ওই দল থেকে একটি শিয়ালের ছানা নর্দমায় পড়ে গিয়ে ভিজে কাঁপতে থাকে। কুকুরগুলি তখন তাকে ঘিরে আপ্রাণ আক্রমণের চেষ্টা চালাচ্ছে। দেরি না করে বিশ্বনাথবাবু ছানাটিকে উদ্ধার করেন। দেখেন শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় আছে সে। তার বাড়িতেই এরপর আশ্রয় দেন শিয়াল শাবক-কে। নিজের স্বল্প অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন ওই শিয়াল ছানার। প্রথমে ড্রপার দিয়ে দুধ খাওয়ানো হয় তাকে। এরপর ধীরে ধীরে পেডিগ্রি খেতে শুরু করে সে।
advertisement
আরও পড়ুন: বসিরহাটে মেডিক্যাল কলেজ…! কবে শুরু হবে কাজ, জানিয়ে দিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক
উত্তর ২৪ পরগনার ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে ছানাটি। এরপর ধীরে ধীরে বাড়িতে রেখেই বড় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধ, লিভার টনিক, কৃমির ওষুধ এবং ভ্যাকসিন দেওয়া হয় তাকে। এভাবেই যেন পরিবারের সদস্যই হয়ে ওঠে চার মাসের শিয়াল ছানাটি। দুপুরবেলার তার প্রিয় খাবার ছিল ভাত ও টক দই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খেলাধুলা আনন্দ, তাকে দেখতে আশপাশের মানুষজনও আসতে শুরু করেন। তবে পশুপ্রেমী বিশ্বনাথবাবুর লক্ষ্য ছিল, ছানাটিকে সুস্থ করে বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া, যাতে সে আবারও তার প্রকৃতিতে ফিরে যেতে পারে। অবশেষে ভারাক্রান্ত মন নিয়েই এদিন বন দফতরের হাতে তুলে দিলেন শিয়াল ছানাটিকে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
বিশ্বনাথবাবু বলেন, “বাচ্চাটিকে ওই অবস্থায় ফেলে দিলে হয়ত বাঁচত না। তাই তাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। এখন সুস্থ হয়ে জঙ্গলে ফিরে যাচ্ছে, এটাই বড় প্রাপ্তি। তাকে ঘরবন্দি করে রাখার কোন ইচ্ছেই ছিল না।” প্রসঙ্গত, এর আগেও বহু প্রাণীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন এই পশুপ্রেমী। বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের মানবিক এমন দৃষ্টান্তে আজ যেন মুগ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও। বন্দী করে নয়, প্রকৃতির সন্তানরা বাঁচুক প্রকৃতিতেই সেই বার্তাও দেওয়া হল এই মহৎ কাজের মধ্যে দিয়ে।
Rudra Narayan Roy