টিটাগড় স্টেশনে নেমে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বলে দেবে, কোথায় এই মোমো পাড়া। ২৫-৩০ বছর ধরে এই এলাকায় মোমো তৈরি হলেও, গত ৫-৬ বছর ধরে বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘মোমো পাড়া’ নামটি। আশপাশের টিটাগড়-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বহু মহিলা প্রতিদিন এসে কাজ করেন এই মোমো তৈরির কারখানাগুলিতে।
advertisement
প্রতিদিন ন্যূনতম ৩০০ টাকা রোজগারে স্বনির্ভরতা পেয়েছেন এলাকার অধিকাংশ মহিলাই। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে মোমো তৈরি এবং অর্ডার অনুযায়ী ডেলিভারি প্রক্রিয়া। এরপর থেকেই স্থানীয়দের জন্য শুরু হয় খুচরো বিক্রি। স্থানীয়দের দাবি, এখানে পাওয়া যায় নানা স্বাদের মোমো- চিকেন, ভেজ, পনির, গন্ধরাজ, কর্ন, চিকেন চিজ থেকে শুরু করে স্পেশাল মোমোও। দামও অত্যন্ত সস্তা।
পাইকারি দরে চিকেন মোমো ২৫ টাকায় ৬ পিস, পনির ও ভেজ মোমো ২০ টাকায় ৬ পিস, আবার সাধারণ ভেজ মোমো ১৫ টাকায় ৬ পিস। পিস হিসেবে মিলছে চিকেন চিজ মোমো ৮ টাকায়, কর্ন মোমো ৬ টাকায়, গন্ধরাজ মোমো ৫-৬ টাকায়। কারখানা থেকে সকালে বাড়িতে বাড়িতে সরবরাহ করা হয় বাধাকপি, পেঁয়াজ, মশলা ও চাটনি তৈরির উপকরণ।
আরও পড়ুন: ২৫ ডিসেম্বর থেকেই বড় বদল আবহাওয়ায়! আরও নামবে পারদ, কনকনে ঠান্ডা, ঘন কুয়াশার সতর্কতা বঙ্গে
এরপর শুরু হয় মোমোর পুর তৈরির কাজ। প্রস্তুত পুর পৌঁছে যায় প্রতিটি বাড়িতে। মহিলারা ময়দার লেচি বেলে মোমো শেপ দিয়ে সারি সারি কন্টেনারে সাজিয়ে ভাপ দেন। দুপুর ২টার পর থেকেই শুরু হয় ডেলিভারি। প্রায় ২০-২৫টি বাড়ির এই পাড়ায় প্রতিটি বাড়িতেই আছে মোমো তৈরির ইউনিট। একটি কারখানায় কমপক্ষে ১০ জন করে মহিলার কর্মসংস্থান হয়। বছরের ৩৬৫ দিন এমনভাবেই চলতে থাকে ‘মোমো গ্রাম’-এর রোজনামচা।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এখন রাজ্যজুড়ে জনপ্রিয় এই এলাকা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে যাচ্ছে এখানকার মোমো। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখানে আসা খুব সহজ। টিটাগড় স্টেশনে নেমে যে কোনও টোটোকে বলতে হবে পাতুলিয়া গর্ভমেন্ট কোয়ার্টার গেট বা মোমো পাড়া। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মম ডেলিভারি হয় এই জায়গা থেকেই বলে জানা গিয়েছে। আর তাই মোমো বিক্রি করেই সাফল্যের মুখ দেখছে গোটা এলাকা।