অবিভক্ত মেদিনীপুরের তমলুক মহকুমার নরঘাট ছিল ব্রিটিশদের নিমক মহাল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অবিভক্ত মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকা খেজুরি, হিজলি, বীরকুল, নন্দীগ্রাম, মহিষাদল ও নরঘাটে একচেটিয়া লবণ তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। স্থানীয় এলাকাবাসীদের শ্রমিক হিসাবে কাজে লাগাত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৮০৪ খেজুরীতে লবণ শ্রমিকেরা ন্যায্য পারিশ্রমিক ও কাজের সময় কমানোর দাবিতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। যার ঢেউ এসে পড়েছিল নরঘাটে। এখানকার লবণ শ্রমিকরাও বিদ্রোহ শুরু করে।
advertisement
আরও পড়ুন : বেহাল রাস্তা আর নয়, ভাতার টাকায় সংস্কার! এমন জনপ্রতিনিধি কবে দেখেছেন?
১৯৩০ সালে গান্ধিজির ডান্ডি অভিযান শুরু করে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দেন। তমলুকে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু হয়। তমলুকের লবণ সত্যাগ্রহীরা লবন তৈরির উদ্দেশ্যে তমলুক রাজবাড়ি থেকে নরঘাট এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
আরও পড়ুন : স্কুলেই নায্য মূল্যের দোকান, মিলছে পড়াশোনার সামগ্রী! কোথায় চলছে এমন পাঠশালা?
লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের আচার্য হিসাবে সতীশ সামন্ত ও উপাচার্য হিসেবে সুশীল কুমার ধাড়া নির্বাচিত হয়। লবন তৈরির প্রথম দিনই নরঘাট থেকে গ্রেফতার করা হয় সতীশচন্দ্র সামন্তকে। দ্বিতীয় দিন গ্রেফতার করা হয় অজয় মুখোপাধ্যায় সহ আরও অনেক লবণ সত্যাগ্রহীদের। তৃতীয় দিন লবন তৈরির কাজে যুক্ত থাকার সত্যাগ্রহী দের ওপর ব্রিটিশ বাহিনী বর্বরোচিত আক্রমণ করে। ব্রিটিশ বাহিনী দমন-পীড়নে নরঘাটে লবন তৈরির কাজে যুক্ত থাকা সত্যাগ্রহীরা ছত্রভঙ্গ হয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
দিঘা যাওয়ার পথে অবস্থিত এই নরঘাট স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা লাভ করেছে। দিঘা যাওয়ার পথে হলদি নদীর তীরে অবস্থিত এই নরঘাট লবণ আন্দোলনের জন্য বিখ্যাত। বর্তমানে নরঘাট এর কাছাকাছি মগরাজপুরে দিঘা হাওড়া রেল লাইনের একটি স্টেশন এর নামকরণ হয়েছে লবণ সত্যাগ্রহ স্মারক স্টেশন নামে।