ঠিক তেমনই রানাঘাট থেকে কিছু পরিচিত আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে পিকনিকে গিয়েছিলেন কয়েকজন। সেখানে বেশ খানিকটা দূরে হলেও হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে তাঁরা দেখেন নির্জন ওই দ্বীপে একমাত্র বাসিন্দা বৃদ্ধ জগবন্ধু বাবু অসুস্থ অবস্থায় শুয়ে কাতরাচ্ছেন। বাড়ি ফিরে তারা শান্তিপুরের প্রিয়াঙ্কা বসাক এবং সৌরভ প্রামানিককে বিষয়টি জানান। প্রিয়াঙ্কা এবং সৌরভ এরপর ভাগীরথী পার হয়ে সেখান থেকে বৃদ্ধকে উদ্ধার করে নিয়ে ভর্তি করেন শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে।
advertisement
আরও পড়ুন: পরীক্ষা দিতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরল না স্কুল পড়ুয়া! কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা, উদ্বিগ্ন পরিবার
এ প্রসঙ্গে প্রিয়াঙ্কা জানান, ওই চরে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। কারণ সেখানে নিয়মিত কোনও ট্রলার নৌকা যায় না। তবে পৌঁছনোর পর বৃদ্ধের কাছ থেকে তার বিবরণ জানা যায়। বাদকুল্লায় ওই বৃদ্ধের বাড়ি। তবে যোগাযোগ খুব কম। আধার কার্ড এবং অন্যান্য সমস্ত কাগজপত্র সেখানেই। বৃদ্ধ জগবন্ধু বাবুর স্মৃতিশক্তি খুব স্পষ্ট নয়। এই দ্বীপে তিনি রয়েছেন ২৫ বছর। বিগত কয়েক বছর আগে পক্ষাঘাতে অসুস্থ হন গুরুতরভাবে। বর্তমানে প্রায় তিন মাস ধরে তিনি কোষ্ঠকাঠিন্য, পা ফোলা এবং অন্যান্য নানান শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। খাবার বলতে শীতকালে পিকনিক করতে গিয়ে শুকনো খাবার যদি কেউ কিছু দেন, সেটাই জমিয়ে রাখতেন। কারণ পিকনিকের আমিষ খাবার তিনি খেতেন না।
তবে এদিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে বেশ কয়েকদিন শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রেখে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা করিয়ে ছুটি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা এবং সৌরভ এই দুই সমাজ কর্মী তাদের নিয়মিত দেখভাল করবেন বলেই জানিয়েছেন। কিন্তু তাদের অনুরোধ সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও পুরসভার দিশারীতে আরও বেশ কিছুদিন রাখার অনুরোধ জানাবেন চেয়ারম্যানকে। শান্তিপুরের সচেতন নাগরিকদের ওই বৃদ্ধকে সহযোগিতার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অন্যদিকে অসুস্থ বৃদ্ধ জগবন্ধু বাবু প্রাথমিক চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে জানান, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে অসুস্থতার কথা। তবে সর্বস্ব ত্যাগ করে নির্জন দ্বীপে একমাত্র মন্দির স্থাপন করে সাধনভজন তিনি ছাড়তে চান না। তাই সুস্থ হয়ে গেলে যেন সেখানেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধ জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডক্টর প্রদীপ দাস অত্যন্ত মানবিকভাবে দীর্ঘক্ষণ ধরে বৃদ্ধের সমস্ত কথা শোনেন এবং চিকিৎসার বাইরেও পথ্যের ব্যাপারে, প্রয়োজন মতন যোগাযোগ রাখতে বলেন ওই যুবক যুবতীকে। মহৎ মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই।






