জানা গিয়েছে, এই গ্রামের অধিকাংশ বাড়িই মাটির তৈরি। এই গ্রাম মূলত কৃষি প্রধান গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। এখানে কিছু কিছু বাড়ির বয়স ৭০ বছরের বেশি। তবে বর্তমানে আধুনিকতার যুগে অনেক পাকা বাড়িও তৈরি হয়েছে।
advertisement
গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, একসময় গ্রাম বাংলার মাটির বাড়ি শুধু বাসস্থান নয়! ছিল আবেগ, ঐতিহ্য আর মানুষের মিলনের প্রতীক। এই সব বাড়িতে বসবাস করত যৌথ পরিবার। যেখানে বাবা-মা, সন্তান, দাদা-দাদু সবাই একসঙ্গে থাকতেন। উঠোনে একসঙ্গে গল্প করা, পিঠে বানানোর উৎসব, সন্ধ্যায় লণ্ঠনের আলোতে পারিবারিক সময় কাটানো-এসব দৃশ্য মাটির বাড়ির অপরিহার্য অংশ ছিল। যা আজও স্মৃতিতে ভাসে। মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা, সহযোগিতা, ভালোবাসার বন্ধন গভীর ছিল।
আরও পড়ুনঃ তেল ভরতে স্কুটি নিয়ে পেট্রল পাম্পে খোদ অরিজিৎ সিং, চমকে গেলেন পাম্প কর্মীরা
কিন্তু আধুনিক ফ্ল্যাট সংস্কৃতি এই চিত্র পুরোই বদলে দিয়েছে। এখন পরিবারের সদস্যরা আলাদা ঘরে, এমনকি আলাদা শহরে বসবাস করেন। মানুষে মানুষে মনের দূরত্ব বেড়েছে। যৌথ পরিবারের ধারণা তো বিলুপ্তপ্রায়। ফ্ল্যাটে বাস করা মানুষের মধ্যে পাশের বাড়ির কাউকে চেনার তাগিদও কম। মাটির বাড়ির সেই আন্তরিক পরিবেশ আর মিলনের সুযোগ আধুনিক বাসস্থান ও সমাজে অনুপস্থিত। যা আমাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে দিন দিন দুর্বল করে দিচ্ছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গ্রামের প্রবীণ নাগরিকরা বলছেন, বর্তমান সময়ে আধুনিকতার ছোঁয়া মানুষের জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনেছে। বিশেষ করে বাসস্থানের নকশায়। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির বাড়ি ছিল প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সম্পূর্ণ মানানসই। এসব বাড়ি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হওয়ায় গরমকালে ঠান্ডা আর শীতকালে উষ্ণ পরিবেশ তৈরি করত। মাটির দেওয়াল, খোলামেলা উঠোন, চারপাশে গাছপালার ছায়ায় পাওয়া যেত নির্মল হাওয়া। মাটির বাড়িতে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে বাস করত, যা স্বাস্থ্য ও মানসিক প্রশান্তির জন্য অত্যন্ত উপকারী।