হযরত শেখ ওরফে হযরত আলী, দিলদার নদাব, আসমাউল নদাব ওরফে কালু নদাব, ইনজামুল হক জিয়াউল হক, ফেকারুল শেখ, আজফারুল শেখ ওরফে বিলাই, মনিরুল শেখ, ইকবাল শেখ, সাবা করিম, নুরুল ইসলাম, ইউসুফ শেখ ওরফে শেখ ইসুব, আকবর আলি ওরফে আকবর শেখ সবাইকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।
advertisement
ওয়াকফ বিল সংশোধনীর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ। চলতি বছরের ১২ এপ্রিল মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত জাফরাবাদ গ্রামে নৃশংসভাবে খুন করা হয় হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাসকে। ওয়াকফ আইন সংশোধনী নিয়ে বিক্ষোভ চলাকালীন এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকেই গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ ওঠে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাঁদের উপর হামলা চালিয়ে প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং একে একে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এই মামলায় দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিপুর আদালতে শুনানি চলে। একাধিক সাক্ষী, ফরেনসিক রিপোর্ট, পুলিশি তদন্ত রিপোর্ট এবং অন্যান্য তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানায়। বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন আদালতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য উঠে আসে, যা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশের তদন্তে উঠে আসে যে, অভিযুক্তরা বাড়ির দরজা ভেঙে বাবা-ছেলেকে টেনে বের করে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করে। চার্জশিটে ৯৮৩ পৃষ্ঠার বিস্তারিত বিবরণে এই নৃশংসতার ছবি ফুটে ওঠে। রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (এসআইটি) ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দেয়, যাদের সকলকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। মোট ৩৮ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণের ভিত্তিতে দীর্ঘ শুনানির পর জঙ্গিপুর আদালতে দোষী সাব্যস্তের পর মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা করা হয় ওই ১৩ জনকে। এদিন রায় ঘোষণার দিন থাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল জঙ্গিপুর আদালত চত্বরে। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ধৃতদের নিয়ে আসা হয় আদালতে। ধৃতদের সাজা ঘোষণা করেন বিচারক অমিতাভ মুখার্জি। কান্নায় ভেঙে পড়েন দোষীদের পরিবারের সদস্যরা। অন্যদিকে রায় দান মিলতেই খুশি প্রকাশ করেছেন চন্দন দাস ও হরগোবিন্দ দাসের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।






