গত কয়েকদিনের অশান্তির জেরে সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ান, সুতি-সহ আশেপাশের একাধিক এলাকার প্রায় সমস্ত বড় বিড়ি কারখানা বন্ধ হয়েছিল। কাজ পাচ্ছেন না বিড়ি তৈরির সঙ্গে জড়িত কয়েক লক্ষ শ্রমিক। যাঁদের অধিকাংশই মহিলা। দিন আনা, দিন খাওয়া এই সমস্ত বিড়ি শ্রমিকদের পরিবারের এখন একটাই প্রার্থনা, দ্রুত মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক।ধু লিয়ান এলাকায় বিড়ি কারখানার একটা বড় অংশ সাংসদ খলিলুর রহমান ও সাগরদিঘীর বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসের৷ এছাড়া ফারাক্কার বিধায়ক এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
advertisement
জেলার অন্যতম বৃহৎ বিড়ি কারখানার মালিক তথা সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, ‘এই রাজ্যের সমস্ত জেলায় যত বিড়ি তৈরি হয়, তার দ্বিগুণ বিড়ি তৈরি হয় কেবলমাত্র জঙ্গিপুর মহকুমায়। দেশের ২৫% বিড়ি শ্রমিক শুধুমাত্র এই জেলায় আছে। গত কয়েকদিনের অশান্তিতে জঙ্গিপুর মহকুমায় বিড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত সমস্ত ধর্মের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। একদিকে যেমন বিড়ি শ্রমিকরা নিয়মিত কাজ করতে পারেননি, তেমনি বিড়ি শিল্পের মালিকরাও তাঁদের কারখানা খুলতে পারেননি। তবে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।’ বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস জানান ,’জঙ্গিপুর মহকুমায় বিড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত ৮০ শতাংশ মানুষই ফরাক্কা, সামশেরগঞ্জ এবং সুতি এলাকার বাসিন্দা। তাই এই শিল্পের উপর আন্দোলনের প্রভাব এই অঞ্চলগুলোতে সব থেকে বেশি পড়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকার জন্য অনেক বিড়ি মালিকরা যেমন সময় মতো জিএসটি জমা করতে পারেননি, তেমনি অনলাইন আর্থিক লেনদেনও দীর্ঘ সময় বন্ধ থেকেছে। ফলে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।’
বিড়ি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাজকুমার জৈন বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে এই এলাকায় বিড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। তবে প্রশাসনিক কর্তাদের আশ্বাসের পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।’ ফারাক্কার বিধায়ক মণিরুল ইসলাম জানান, গত ৪-৫ দিন ধরে বিড়ি তৈরির স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় মালিক এবং শ্রমিক পক্ষ মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে সকলের। বিড়ি শ্রমিক অনিমেষ দাস বলেন, ‘পরিবারে ছ’জন আছে৷ আমার ওপর তারা নির্ভরশীল। কাজ না করলে তো না খেয়ে মারা যাব।’ তবে শুক্রবারের পরে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে।