দীর্ঘদিন ধরে বছর আটত্রিশের সাবিত্রী বিশ্বাসের উপর পারিবারিক অত্যাচার চলছিল বলে অভিযোগ। শ্বশুরবাড়ির ইন্ধনে তাঁর ১৮ বছরের ছেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। নেশার টাকা না দিতে পারায় খুন হতে হলো সাবিত্রীকে।
আরও পড়ুন- এবার মহানন্দা নদীতে 'আতঙ্ক', সকাল সকাল ভিড় জমে গেল নদীর পাড়ে
খুনের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এসে রবিবার সকালবেলা দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সঙ্গে ছেলেকে আটক করে। ঘটনাটি ঘটেছে গোসাবা থানার বালি ২ নম্বর অঞ্চলের বিরাজ নগর কলোনি পাড়ায়। সাবিত্রীর সঙ্গে তাঁর স্বামী সুকুমার বিশ্বাসের বছর বারো আগে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।
advertisement
সুকুমার কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকাকালীন আরেকটি বিবাহ করেন।অসহায় সাবিত্রী এক ছেলে ভোলা, আরেক মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে শুরু করেন। নিজের বাবার বাড়িতে থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে এবং নিজে খাটাখাটনি করে ছেলে-মেয়ের মুখে অন্ন তুলে দিতেন।
অন্যদিকে সাবিত্রীর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির ইন্ধনে তাঁর উপর অত্যাচার চলত। ছেলে ভোলা মায়ের উপর শারীরিক অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। আস্তে আস্তে নেশাগ্রস্ত হয়ে উঠেছিল ভোলা।
শনিবার রাত নটা নাগাদ ভোলা মদ খেয়ে বাড়ি ফেরে। তার পর আবার মদ খাওয়ার জন্য মায়ের কাছে টাকা দাবি করে। সাবিত্রী বিশ্বাস কোনওভাবেই ছেলেকে আর টাকা দিতে রাজি হননি। সেই নিয়ে শুরু হয় বচসা।
আরও পড়ুন- একই এলাকা, একই কায়দা! ফের ভাঙড়ে উদ্ধার বিপুল অস্ত্র
নেশার ঘোরে ভোলা মাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মা মারা গিয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত করতে ভোলা গায়ে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশীরা এসে আগুন নেভায়। ততক্ষণে সাবিত্রী মারা যায়।
স্থানীয়দের দাবি, ভোলা মদ খাওয়ার জন্য প্রায়ই মায়ের উপর অত্যাচার করত। সাবিত্রী খুব কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের মানুষ করেছিলেন। তাঁর এমন পরিণতিতে রীতিমতো ব্যথিত ও হতাশ পাড়ার লোকজন। গোসাবা থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। অন্যদিকে ভোলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।