এ দিন সকাল থেকে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোটগ্রহণ চলছিল নন্দীগ্রামে৷ কিন্তু বেলা একটার পর রেয়াপাড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বয়াল প্রাথমিক স্কুলের ৭ নম্বর বুথে যান৷ সকাল থেকেই ওই এলাকায় তৃণমূল সমর্থকরা ভোট দিতে পারছিলেন না বলে অভিযোগ৷ এই খবর পেয়েই ওই বুথে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
advertisement
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছতেই বয়াল এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে৷ হাতে ইট, বাঁশ, লাঠি নিয়ে বুথের বাইরে জড়ো হয়ে যান শয়ে শয়ে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থক৷ কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সেখানে কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে দেখা যায়নি৷ বুথের ভিতরে আধাসেনা থাকলেও বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও জওয়ানকে কেন দেখা গেল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ পুলিশ বাহিনীও পর্যাপ্ত সংখ্যায় না থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়৷ এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীকে বুথের বাইরে আনার সাহস পাননি তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা৷
মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছনোর প্রায় আধ ঘণ্টা পর সেখানে প্রথমে পৌঁছয় RAF৷ তার পরে আসে অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ গোটা ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বুথের ভিতরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি৷ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি চাই মানুষ ভোট দিক৷ কাউকে বিরক্ত করতে চাই না৷' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও অভিযোগ করেন, 'এখানে ৮০ শতাংশ ছাপ্পা ভোট পড়ে গিয়েছে৷ আমরা কোর্টে যাব, লিগাল অ্যাকশন নিচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপি-র কথায় কাজ করছে৷ ওরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে কাজ করছে৷ বাইরে সব হিন্দিতে কথা বলছে৷ এরা বাইরের লোক৷'
এ দিনের ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে, নন্দীগ্রামের মতো আসনে যে উত্তেজনা ছড়াতে পারে তা আগে থেকেই জানত নির্বাচন কমিশন৷ সেই মতো একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছিল৷ কিন্তু এতকিছুর পরেও কেন মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেও পর্যাপ্ত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মিলল না, সেই প্রশ্ন উঠছে৷ পরে অবশ্য় ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷