বৈঠকের পর রাজ্যের জল সম্পদ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া সাংবাদিকদের জানালেন, "কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রকল্পটি খুঁটিনাটি বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির কাছে। মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন বরাদ্দকৃত অর্থ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিষয়টি পাঠানো হয়েছে অর্থ কমিশনের কাছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আস্বস্ত হয়েছি আশা করছি শীঘ্রই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রীয় সরকার।" সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র সাংবাদিকদের জানান, "ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াও রাজ্যের বেশকিছু নদী সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নীতি আয়োগের সঙ্গে কথা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে এবছর বন্যা সমস্যা মেটাতে ৪৯৮ কোটি এবং ৫৭১ কোটির দুটি প্রকল্পে মঞ্জুরি চাওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডিপিআর জমা দিতে বলেছেন। আমরা ফিরে গিয়ে বিডিআর তৈরি করে পাঠাবো।" পাশাপাশি সৌমেন মহাপাত্র আরও জানিয়েছেন, "পশ্চিমবঙ্গ সবচেয়ে বেশি বন্যাপ্রবণ রাজ্য। ডিভিসি জলাধার অনেক আগে তৈরি হয়েছে। জলাধার গুলি জল ধারণ ক্ষমতা বহুবছর পুনর্বিবেচনা করা হয়নি। বেশকিছু জলাধারের জল ধারণ ক্ষমতা প্রায় নেই। বিষয়টি ভাবা দরকার। ড্রেজিং করে জলাধার গুলির ক্ষমতা বাড়ানো উচিত। মন্ত্রী বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। আপনারা জানেন, বর্ষার সময় অন্য রাজ্যের জল বাংলাকে বহন করতে হয়।"
advertisement
একইসঙ্গে রাজ্যে নদী ও সমুদ্রতীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্র গুলির ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন রাজ্যের প্রতিনিধিরা। যার মধ্যে রয়েছে জাতীয় হেরিটেজ সুন্দরবন এবং দীঘার মতো পর্যটন কেন্দ্রের দুরবস্থা। এই পর্যটন কেন্দ্রগুলোর জন্য মাষ্টার প্ল্যান তৈরির সুপারিশ করেছে রাজ্যের প্রতিনিধি দল।যদিও মানস ভুঁইয়া সৌমেন মহাপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, "গত ৬২ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। তাই কথায় চিড়ে ভিজবে না। যতক্ষণ না টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে ততক্ষণ পুরো বিষয়টি 'ঠগের বাড়ির ভোজ'-এর মতো। না আঁচালে বিশ্বাস নেই।" এই প্রসঙ্গে মানস ভুঁইয়া বলেন, "কেলেঘাই-কপালেশ্বরী প্রকল্পটি ৬৫০ কোটির। কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়ে ৩২৫ কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনও ১৪৮ কোটি টাকা দেয়নি।"তিনি আরও জানান, "ঘূর্ণিঝড় আয়লার পর সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তারা মাত্র ১৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে।" মানস ভুঁইয়া এবং সৌমেন মহাপাত্র দুপুর ধরে ঘাটালের অভিনেতা সাংসদ দেব বলেন, "এই সরকারকে সত্যিই বিশ্বাস নেই। ২০১৪ থেকে লড়ে যাচ্ছি। ১৯৫২ থেকে আলোচনা চলছে। এখন মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে, মন্ত্রক এগোচ্ছে। ফাইনান্স কমিশনের বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।"এদিন রাজ্যের তরফের এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জলসম্পদ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী হুমায়ুন কবীর, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা এবং শ্রীকান্ত মাহাতো, রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়, ঘাটালের সংসদ দীপক অধিকারী, মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া এবং পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি।
Rajib Chakraborty