২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মধ্যমগ্রাম থানা এলাকার বিরেশপল্লির একটি ভাড়া বাড়িতে খুন হন সুমিতা ঘোষ। অভিযোগ, প্রথমে ইট ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে খুন করা হয় তাঁকে। তারপর মৃতদেহ লুকোনোর জন্য ট্রলি ব্যাগে ঢোকানোর চেষ্টা করা হয়। ব্যাগ ছোট হওয়ায় পা দু’টো বাইরে বেরিয়ে থাকে, সেই অবস্থাতেই সারা রাত ঘরে পড়ে থাকে লাশ।
advertisement
আরও পড়ুনঃ বিশ্বকাপ জয়ে চোখে জল ননদের, মাঠে ছুটে এলেন হবু স্বামী পলাশ! নভেম্বরেই বিয়ের পিঁড়িতে স্মৃতি মন্ধানা
পরদিন সকালেই আরতি ও ফাল্গুনী কলকাতায় রওনা হন। সেখানে গিয়ে মৃতা সুমিতার ফোনপে ব্যবহার করে গয়না কেনা, টাকা তোলা, এমনকি হোটেলে খাওয়া-দাওয়ার তথ্যও উঠে আসে তদন্তে। এরপর নতুন একটি বড় নীল ট্রলি ব্যাগ কিনে ফের মধ্যমগ্রামে ফিরে আসে তারা। সেই রাতে লাশটি নতুন ব্যাগে ভরতে গিয়ে হাঁটুর নীচ থেকে পা কেটে ফেলা হয় বলে তদন্তে প্রকাশ পায়।
২৫ ফেব্রুয়ারি ভোরে মৃতদেহ সমেত ব্যাগটি নিয়ে তারা কুমারটুলি ঘাটের দিকে যাচ্ছিল বলে জানা যায়। কিন্তু স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়ায় দুজনকেই নীল ট্রলি ব্যাগ-সহ ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় উত্তর বন্দর থানার পুলিশ। প্রথমে সেখানেই মামলা রুজু হয়, পরে তদন্তভার যায় মধ্যমগ্রাম থানায়।
বৈজ্ঞানিক তদন্তে উঠে আসে একের পর এক নৃশংস তথ্য। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় রক্তমাখা দা, বঁটি, হাতুড়ি ও আধলা ইট—যা দিয়ে খুন করা হয়েছিল বলে ফরেনসিক রিপোর্টে নিশ্চিত করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০ মে ২০২৫ তারিখে আরতি ঘোষ ও ফাল্গুনী ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
৩০ অক্টোবর আদালত দুজনকেই দোষী সাব্যস্ত করে। অবশেষে সোমবার সাজা ঘোষণা করা হয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গোটা মধ্যমগ্রাম জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, “এত নির্মম ঘটনা এই এলাকায় কোনোদিন ঘটেনি। বিশ্বাসই হচ্ছে না মা-মেয়ে মিলে এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে।”
