কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি যেমন ছোট পুতুলের জন্য বিখ্যাত, তেমন শান্তিপুরের মৃৎশিল্পীদের তৈরি দেবী মূর্তির খ্যাতি সারা দেশ জুড়ে, যার কারণে কলকাতার কুমোরটুলিতে শান্তিপুরের মৃৎশিল্পী কারিগরদের খুব চাহিদা থাকে। এদের মধ্যে কেউ মাটি থেকে নানা রকম মাটির তৈরি জিনিসপত্র করেন, যেমন মাটির ভার, হাড়ি, কলসি, সরা, লক্ষ্মীর ভান্ডার, আরও কত কি। কিন্তু শান্তিপুরের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ মৃৎশিল্পী যুক্ত আছেন মূর্তি বা প্রতিমা নির্মাণে। ছোট থেকে বড় নানা রকম সাইজের সব ধরনের প্রতিমা গড়তে পটু তারা।
advertisement
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ আমলের তৈরি এই স্টেশনে শুধুই আপ ট্রেন! আজও দেখা নেই ডাউন ট্রেনের
তাদের মধ্যেই এক মৃৎশিল্পী সুধীর কুমার পাল ওরফে গোরাচাঁদ পাল। ২০১২ সালে মূর্তি নির্মাণে পারদর্শিতার জন্য জাতীয় পুরস্কারের পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। ৭২ বছর বয়সেও তিনি প্রতিমায়দিয়ে চলেছেন তুলির টান। তবে আগের মত এই কাজে আর কেউ নতুন করে আগ্রহ দেখাচ্ছে না, মৃৎশিল্পের কাজে আগের মতো রোজগার নেই। কারণ একটাই, শান্তিপুরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তাঁতশিল্প নির্ভর, যা একেবারেই ধ্বংস প্রায়। তাই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সুধীর কুমার পালও আক্ষেপের সুরে বলেন, “যদি আগের মতো তাঁত শিল্প বেঁচে থাকত তাহলে তাদের মৃৎশিল্পের আজ এই অবস্থা হতো না। আগের সেই ব্যস্ততা নেই মৃৎশিল্পের কাজে, শুধু বংশপরম্পরায় এই মৃতপ্রায় শিল্পকে ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া মাত্র।”
আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদ থেকে প্রিন্সেপ ঘাট, একাই কায়াক নিয়ে ছুটলেন যুবতী, কিন্তু কেন!
অন্যান্য জায়গার মৃৎশিল্পীরা সারা বছর বিভিন্ন রকম সরকারি বেসরকারি অর্ডার পেয়ে থাকেন মাটির বিভিন্ন রকম জিনিসপত্র বানানোর জন্য কিন্তু শান্তিপুরে শুধুমাত্র নির্ভরশীল প্রতিমা গড়ার ক্ষেত্রেই । তাই তিন-চার মাস ভালোভাবে চলতে পারলেও সারা বছর কাটাতে হয় দুশ্চিন্তা নিয়েই। তবে মৃৎশিল্পীদের নিয়ে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী বলেন, “এর আগে মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে, তারা বেশকিছু দাবি রেখেছে আমার কাছে। আমি এই মৃৎশিল্পের পরিস্থিতি নিয়ে তুলে ধরব সরকারের কাছে।”
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
এখন দেখার বিষয় আদতেও তাঁত শিল্পের পাশাপাশি মৃৎশিল্পীদেরও কোনও স্থায়ী সুরাহা মিলে কিনা।
Mainak Debnath