উল্লেখ্য গত কয়েক মাস ধরে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এক যুবক। গায়ে মলিন পোশাক, মুখে একরাশ ক্লান্তি, কারো সঙ্গে বিশেষ কথা বলতেন না তিনি। কখনও দুর্বোধ্য ভাষায় বিড়বিড় করতেন, নিজের নাম পরিচয় সম্পর্কে কিছুই জানাতে চাইতেন না। প্রায় চার মাস আগে ওই যুবক পৌঁছে যান ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের প্রদিমা গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম রায়, দেবাশীষ রায়, রতিকান্ত মান্না, অভিজিৎ রায়, তাপস রায় এবং গোবিন্দ নাওড়িয়া সহ একাধিক জনসাধারণ মিলে তাঁকে আশ্রয় দেন।
advertisement
আরও পড়ুন: চারদিকে সবুজ, মাঝে শান্তশিষ্ট নদী! হাতের কাছেই রয়েছে বর্ষায় ঘুরতে যাওয়ার পারফেক্ট স্পট, না জানলে মিস
গ্রামের যুবকেরা নতুন পোশাক ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন। এরপর তাঁরা ওই যুবকের পরিচয় জানার চেষ্টা চালান। একসময় অনেক কষ্টে তাঁর কথাবার্তার সূত্র ধরে জানতে পারা যায়, যুবকের বাড়ি কেরলের তিরুবনন্তপুরমে। এরপর বেলিয়াবেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সহায়তায় যোগাযোগ করা হয় কেরল পুলিশের সঙ্গে। অবশেষে মেলে ওই যুবকের পরিবারের খোঁজ।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
দুই বছর আগে, ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর, ওই যুবক নিখোঁজ হন বলে জানান তাঁর দাদা বিজু। তিরুবনন্তপুরম থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছিলেন তিনি। ভাইকে দীর্ঘদিন খুঁজেও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “আজ ভাইকে ফিরে পেয়ে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ ও আবেগাপ্লুত।” এদিন, কেরল থেকে ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া থানায় এসে ভাইকে নিজের সঙ্গে ফিরিয়ে নিয়ে যান তিনি। বিদায়ের মুহূর্তে আবেগঘন হয়ে ওঠে পরিবেশ। পুলিশ ও এলাকার যুবকের এই মানবিক উদ্যোগে খুশি এলাকাবাসীও। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের এই ভূমিকা একদিকে যেমন মানবিক সহমর্মিতার নিদর্শন হয়ে উঠল, তেমনই নিখোঁজদের পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে পুলিশের দায়িত্বশীল ভূমিকাকেও আরও একবার সামনে আনল।
তন্ময় নন্দী