একশো বছর আগেও এই শহরে কার্তিক পুজোর প্রচলন ছিল। কিন্তু কার্তিক লড়াইয়ের কোনও উল্লেখ পাওয়া যায়না। এই বিষয়ে শিক্ষক তথা স্থানীয় ইতিহাসবিদ তুষার পন্ডিত জানিয়েছেন, “কাটোয়ার কার্তিক লড়াই আধুনিক কালের। ১০০ বছর আগের প্রাচীন গ্রন্থ, ইতিহাস এবং সংবাদপত্র এবং কাটোয়ার যে প্রথম লিখিত ইতিহাস নিবারণ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সেখানে কার্তিক পুজোর উল্লেখ আছে। কিন্তু কার্তিক লড়াইয়ের উল্লেখ নেই। এটা মূলত বাবু সম্প্রদায়, ধনী সম্প্রদায় পৃষ্ঠপোষকতায়, কিছুটা বারবনিতাদের সন্তান হীনতার যন্ত্রণা থেকে লাঘব পাওয়ার জন্য কার্তিক পুজোর প্রচলন করেন।
advertisement
আরও পড়ুন : আউশগ্রামে ধামাকা! বোলপুরের সোনাঝুড়ির আদলে শুরু নতুন ‘একতারা’ হাট, প্রথম দিনেই উপচে পড়া ভিড়
কাল থেকে কালান্তরে কার্তিকের চেহারা বদলেছে। এই মুহূর্তে এটি কাটোয়া মহকুমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ উৎসব এবং এর সঙ্গে অর্থনীতির একটা গভীর সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে। তুষার পন্ডিত আরও জানিয়েছেন, কার্তিক পুজো নিয়ে বিভিন্ন গল্প রয়েছে। তবে তার কোনও লিখিত প্রমাণ নেই, সবটাই মুখে মুখে ঘোরে। তিনি এই বিষয়ে আরও বলেন, “আমাদের ছোটবেলায় আমরা দেখেছি যে কাঁধে করে কার্তিক ঘুরত। হ্যাঁচাকের আলো থাকত। তখন আধুনিক প্রযুক্তির আসেনি। সবটাই একমুখী, তবে কোথাও কোথাও বিপরীত মুখী শোভাযাত্রা হত।
আরও পড়ুন : পছন্দের ক্রিকেটার দেখেই দর হাঁকলেন মালিকরা, কারোর দাম ১০ হাজার, কেউ আবার কম! মালদহে IPL’র ধাঁচে নিলাম
শোভাযাত্রার সামনে কাটোয়ার উচ্চবিত্ত ধনী লোকেরা থাকতেন। কিন্তু রক্তপাত বা সংঘর্ষের খবর কোনও খবরের কাগজে নেই। একটা অনুমান করা যেতে পারে, এখন লড়াই বিভিন্ন ক্লাবের মধ্যে বিস্তার পেয়েছে। কিন্তু যেটা শুরু হয়েছিল ধনবান ব্যক্তিদের মাধ্যমে। তাঁদের এক একটা ঠাকুর ছিল। যেমন লবণগোলার কার্তিক, খরেরবাজার, সাতভাই পুরনো, যেগুলি মূলত তারাই চালনা করতেন। তাদের যে আড়ম্বরের প্রতিযোগিতা, আড়ম্বরের লড়াই, ছিল। সেটি এখন শহরের কার্তিক লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
সবমিলিয়ে এটা বলাই যায়, যে বাবুদের হাত ধরে বা ধনী ব্যবসায়ীদের হাত ধরে কার্তিক পুজোর শুরু হয়েছিল, তা এখন সর্বসাধারণের মধ্যে বিস্তার করেছে। তুষার পন্ডিতের কথায়, আজ থেকে পঞ্চাশ শাট বছর আগে কার্তিক লড়াইয়ের অনেকটাই বিশৃঙ্খলা ছিল। প্রশাসনের এতটা নিয়ন্ত্রণে ছিলনা। এরফলে কার্তিক লড়াইয়ের রাতগুলিতে শান্তিপ্রিয় মানুষ আতঙ্কে থাকতেন। গ্রাম থেকে এখনকার তুলনায় আগে অনেক বেশি মানুষ আসত। কিন্তু বিগত কয়েকবছর দেখা যাচ্ছে প্রশাসন পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করেছে। কার্তিক লড়াই এখন অনেক সুশৃঙ্খল এবং অনেক নান্দনিক হয়েছে।





