পুজোর আগে বাড়তি রোজগারের জন্য কাঁকসার জঙ্গলমহলে ৮ থেকে ৮০ সকলের ব্যস্ততা তুঙ্গে। শাল-পিয়ালের জঙ্গল থেকে পাতা সংগ্রহ করেই রোজগারের দিশা দেখেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা। জঙ্গলের নেকড়ে, শিয়াল, বিষধর সাপ-খোপকে উপেক্ষা করেই রুটিরুজির টানে শালপাতা সংগ্রহ করেন মহিলারা।
আরও পড়ুনঃ বচসার মাঝেই পেট্রোল ছিটিয়ে গায়ে আগুন! স্টেশনের পাশেই মারাত্মক কাণ্ড, ছুটতে হল হাসপাতাল
advertisement
সেই শালপাতা বুনে তৈরি করা হয় থালা। পুজোর সময় ওই শালপাতার থালার ব্যাপক চাহিদা থাকে। অতিরিক্ত শালপাতা বুনতে পারলেই হবে বাড়তি রোজগার। তাই বাড়ির সকল সদস্যরা মিলে পাতা বোনার কাজে লেগে পড়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের কাঁকসা ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের জঙ্গলমহলের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ শালপাতার থালা তৈরি করে জীবন-জীবিকা অর্জন করেন। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে শালপাতার সামগ্রী তৈরির জীবিকা। এই কাজ করে উপার্জন করেন অধিকাংশ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা। শালপাতা থেকে তৈরি সামগ্রী বিক্রি করেই তাঁরা স্বনির্ভর হন।
সারা বছর এভাবেই চলে তাঁদের রুজি রোজগার। জানা যাচ্ছে, বর্ষাকাল যেতেই জঙ্গলের শাল গাছের পাতা সবুজ ও তরতাজা হয়ে ওঠে। ওই পাতা দিয়ে থালা ও বাটি তৈরি করেন তাঁরা। তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ওই জঙ্গল এলাকায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলাদের জন্য বিকল্প কোনও জীবিকার ব্যবস্থা না থাকায় বংশ পরম্পরায় তাঁরা এই ভাবেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জঙ্গলে ইতিমধ্যেই নেকড়ে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। রয়েছে শিয়াল, বিষধর সাপ-খোপ। কিন্তু ওই ঘন জঙ্গল থেকেই মেলে উপার্জনের কাঁচামাল। বিপজ্জনক হলেও তাই উপায় নেই!
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এছাড়া দুর্গাপুজো মানেই প্রায় সব শ্রেণির, সব স্তরের মানুষ প্রতক্ষ্য ও পরোক্ষভাবে রোজগার করে থাকেন। পুজো আসতেই রাজ্যের অর্থনীতির ‘সার্কুলেশন সিস্টেম’ চালু হয়ে যায়। আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওই মহিলাদের দাবি, কাঁচা শালপাতা সংগ্রহ করে, কুচি কাঠি তুলে এনে, থালা বুনে ওই থালা রোদে শুকোতে যা পরিশ্রম হয় তার তুলনায় আয় অনেক কম। কিন্তু অর্থ উপার্জনের আর কোনও উপায় না থাকায় বংশপরম্পরায় এই শিল্প বহন করে চলেছেন তাঁরা। তবে পুজোর আগে এলাকায় দেখা গেল অন্য চিত্র। বাড়তি রোজগারের আশায় পরিবারের সকলে একত্রিত হয়ে হাজার হাজার পাতা বুনে চলেছেন।