নদী চরে একটি গর্তের মধ্যে একটি পাথর খণ্ড। তখন পাথর খণ্ডটি যে দেবী কালী তা গ্রামের মানুষ জানতে পারেননি। তবে নদীর চরে এমন খবর শুনে গ্রামের মানুষ নদীর পাড়ে গিয়ে ভিড় জমায়।
আরও পড়ুন: ‘মণীষা কৈরালা প্রয়াত’, মহেশ ভাটের লেখায় তোলপাড় বলিউড! অবিশ্বাস্য এক কাহিনি
যদিও পাথর খন্ডটি ঠিক কোন পাথরের তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে সেই শিলামূর্তিকে গ্রামের মানুষ দেবী রূপে খড়ের ছাউনি মাটির ছিটে বেড়ার মন্দির করে প্রতিষ্ঠা করে গ্রামে। তার পর গোটা গ্রামের মানুষ পুজো শুরু করেছিল মায়ের। সেই নিয়ম মেনে আজও পুজোর আয়োজন হয় গ্রামে।গ্রামবাসীদের কথায় জানা যায়, ভক্তি ভরে ডাকলে মা নাকি সাড়া দেন। এমনটাই বিশ্বাস এখানকার গ্রামের মানুষের।স্থানীয়দের কথায়, নদীর তাণ্ডব রূপ দেখা দিয়েছিল।
advertisement
আরও পড়ুন: ‘এটা কি জন্মদিনের উপহার?’ ইডির জন্য কাল বড় পরিকল্পনা অভিষেকের! জানিয়ে দিলেন শশী
নদী ভাঙতে ভাঙতে গ্রাম গ্রাস করছিল। তখন গোটা গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক মানুষের মধ্যে। তবে সেই ভয়াবহ নদী ভাঙন থেকেও রক্ষে হয়েছিল মায়ের কৃপায়। জানা যায়, মন্দিরের কিনারায় এসে শান্ত হয়েছিল নদী, থমকে পড়েছিল ভাঙন। স্থানীয়দের বিশ্বাস সেসময় মা কালী রক্ষা করেছিল গ্রামকে। এভাবেই নাকি গ্রাম বিপদ মুক্ত হয় মায়ের কৃপায়। তাই মা কালীর উপর বিশ্বাস আজও। তাঁরা জানায়, গ্রামের মানুষ যে কোনও কাজের আগে মা কালীকে জানান দেন পুজো দিয়ে। মা কালী গ্রামের মানুষের কাছে অভিভাবক সম। স্থানীয়দের কথায় শুধু যে বিরামপুর গ্রাম, তা কিন্তু নয়। এই মায়ের মাহাত্ম ছড়িয়ে রয়েছে দূর দূরান্তের মানুষের মধ্যে।
প্রতি বছর কালী পুজোর দিন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে মন্দির প্রাঙ্গণে। কালী পুজোর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়। পুজোর দিন সকাল থেকে পুজোর আয়োজন। সারা রাত ধরে চলে হোম-যজ্ঞ পুজোপাঠ। গ্রামের ৮-৮০ বয়সের মানুষ এসে হাজির হয় মাতৃ মন্দির প্রাঙ্গণে।
এ প্রসঙ্গে গ্রামবাসী শিশির মান্না ও সন্তোষ কুমার মান্না জানান, ‘কথিত রয়েছে সে সময় মুক্তরাম মান্না নামের এক গ্রামের মানুষ। এই মা কালীর মূর্তি পেয়ে ছিলেন নদী পার থেকে। সেই প্রতিষ্ঠা হয় গ্রামে। যদিও শিলা মূর্তির উপরে একটি কালী মায়ের বিদ্রোহের রূপ দেয়া হয়েছে। প্রায় তিন শত বছর ধরে গ্রামের মানুষের কাছে অভিভাবক সম মা কালী। যেমন বিপদ মুক্ত হতে ছুটে আসে মায়ের চরণ তলে। তেমনি যে কোনও শুভ কাজের আগেই মা কালীকে জানান দেওয়ার কর্তব্য মনে করেন গ্রামের মানুষ। গ্রামবাসীদের কথায়, এই রীতি বা নিয়ম প্রায় তিনশত বছরের।’
রাকেশ মাইতি