ঝাড়গ্রাম জেলার শিলদা এলাকার বছর ৩৫ এর স্নেহাশিষ দুর্লভ। স্নাতক পাস করার পর ২০০৯ সালে তিনি করেন বিউটিশিয়ান কোর্স। বাড়িতে এসে তিনি ছোট্ট পার্লার করার পর ধীরে ধীরে তার পার্লারের পরিচিতি বাড়ে। কারণ তখন ওই এলাকায় তেমন কোনও বিউটি পার্লার ছিল না। তবে গ্রামীণ এলাকায় ছোট্ট ছোট্ট ছেলে মেয়েদের সরকারি বিদ্যালয়ের পর তেমন কোনও পড়াশোনার ব্যবস্থা ছিল না। মানুষের মত মানুষ হওয়া তো দূরের কথা, মাওবাদী সময়কালে পড়াশোনার তেমন ধার কাছেযেত না ছাত্র-ছাত্রীরা। তখন থেকেই তার মনে ছিল অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো, তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু করা। করোনার আগে ২০১৯ সালে ২৬ জন ছেলে-মেয়ের বিনা পয়সায় কোচিং শুরু করেন তিনি।
advertisement
আরও পড়ুন : রাতে আপন খেয়ালে বাঁশিতে সুর তোলেন, হালকা আবহে ভরে যায় কলেজ প্রাঙ্গণ, চিনে নিন তাকে
শুধু পড়াশোনা নয় তাদেরকে খাতা, কলম, ব্যাগ ও দিয়েছেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের সংখ্যা। করোনা মহামারীতে তার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলেও তিনি বন্ধ করে দেননি অসহায় ছেলেমেয়েদের পড়াশোনাএবং তাদের পাশে থাকার কাজ। সব চাপ সামলেও তিনিতাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বর্তমানে তিনি পরিচিত ছোটু দা নামে। করানোর সময় সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬ থেকে ২৬০ এ। এরপর ছাত্র-ছাত্রীদের শুধু পড়াশোনা নয় তাদের খেলাধুলা আবৃত্তি চর্চা, অঙ্কন, নাচ-গান শেখানোর ব্যবস্থা করেছেন তিনি। বিউটি পার্লার চালিয়েই করেন তিনি এই সকল কাজ।
আরও পড়ুন : দেওয়াল থেকে শ্রেণীকক্ষ সাজানো নানান ছবিতে, জানেন কোথায় আছে এমন বিদ্যালয়?
ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভেবে ঠাকুমার দেওয়া একটি গয়নাও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। মনে কষ্ট চেপে রেখে প্রান্তিক এলাকায় অসহায় ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে তিনি হাসিমুখেই মেনে নিয়েছেন কষ্ট। ভবিষ্যতে তার ইচ্ছে অসহায় ছেলেমেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় তৈরি করা। কখনও এসেছে কটুক্তি কখনও ভালোবাসা, ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নতি এবং তাদের হাসি মুখ ভরসা ছোটু দার।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
জঙ্গলমহলের প্রান্তিক গ্রামীণ এলাকার অসহায় পরিবারের মসিহা এই ছিপছিপে চেহারার ছোটুদা।
রঞ্জন চন্দ