ওই সভা থেকেই সুভাষচন্দ্র বসু ঘোষণা করেছিলেন, ‘আপস নয়, সংগ্রাম ও ত্যাগের পথেই স্বরাজ আসবে’। এখন যেটা অরণ্যশহরের দুর্গা ময়দান। ৭৮ বছর আগে সেটার নাম ছিল লালগড় মাঠ। জানা যায়, সভার দিন সকালে মেদিনীপুর থেকে গাড়িতে ধেড়ুয়া হয়ে ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। ঝাড়গ্রাম আসার পথে দহিজুড়িতে বিশাল তোরণ বানিয়ে সুভাষচন্দ্রকে অর্ভ্যথনা দেওয়া হয়েছিল। দুর্গা ময়দানের পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে মাটিতে বসেই দুপুরের খাবার খেয়েছিলেন। বসেছিলেন সাদামাটা একটা কাঠের চেয়ারে।
advertisement
আরও পড়ুন : চিকিৎসায় মন বসেনি, জেল খেটেছেন বহুবার! কারাগারে গঙ্গাজল দিয়ে রান্না করতেন নিজে
সুভাষচন্দ্র বসুর ব্যবহৃত সেই সব জিনিসগুলি আজও সযত্নে রাখা রয়েছে এই বাড়িতে। ঝাড়গ্রামে এসে ব্যবসায়ী নলিনবিহারী মল্লিকের আতিথেয়তা গ্রহণ করে একটি টালির বাড়িতে (এটি এখন উড়ালপুলের কাছে বাছুরডোবা পেট্রোল পাম্পের অফিস ঘর) কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়েছিলেন। আরও কিছু কর্মসূচি সেরে ঝাড়গ্রাম কোর্টে বার লাইব্রেরিতে আইনজীবীদের সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন : বাড়িতে অ্যাকোরিয়াম আছে? এই হাটে ১ টাকায় মিলবে রঙিন মাছ! ঠিকানা জেনে রাখুন
তারপর বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ সভাস্থলে পৌঁছেছিলেন নেতাজি। তার আগে ঝাড়গ্রামের শান্তিনিকেতন হোটেলে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন। সভা সেরে ওই রাতেই ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে হাওড়ার ট্রেন ধরেছিলেন তিনি। ঝাড়গ্রাম স্টেশনের যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে খানিকক্ষণ বসেছিলেন। শহরের ঐতিহ্যবাহী সেই দুর্গা ময়দানে স্থায়ী দুর্গামন্দির তৈরি হয়েছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
১৯৯৭ সালে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে দুর্গা ময়দান রক্ষা কমিটির উদ্যোগে মাঠের একপাশে একটি স্মারকস্তম্ভ তৈরি করা হয়। স্মৃতিস্তম্ভের ফলকটিতে অবশ্য ভুল তথ্য লেখা রয়েছে। ফলকে লেখা আছে, পরাধীন ভারতবর্ষে সুভাষচন্দ্রের শেষ জনসভাটি দুর্গা ময়দানে হয়েছিল। যদিও সেই তথ্য ঠিক নয়। সঠিত তথ্য হল, অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় সেটি ছিল সুভাষচন্দ্রের শেষ জনসভা। তবে ঐতিহ্যবাহী মাঠে এখন লরি থেকে পণ্যসামগ্রী খালাসের কাজ হয়।