মঙ্গলবার ভোররাতে একটি দলছুট হাতির হামলায় মৃত্যু হল এক শবর মহিলার। মৃতার নাম যত্নী ভক্তা (৫৮)। তিনি ডানমারী গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোর ৪:৩০ নাগাদ যত্নী ভক্তা বাড়ির বাইরে বেরোনোর সময় একটি হাতির মুখোমুখি হন। আচমকা হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে ধরে আছাড় মারে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
advertisement
আরও পড়ুন: হাতের কাছেই লুকোচুরি খেল ছিল ৫০ হাজার টাকা! জানতেনই না অসহায় যুবক, পাইয়ে দিলেন এই সৎ মহিলা
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরে একটি দল হাতি মাণিকপাড়া রেঞ্জ এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছিল। সোমবার রাতে হুলা পার্টির সদস্যরা ওই দলটিকে ড্রাইভ করে ডাইনমারী গ্রামের সামনে ছেড়ে দিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রামবাসীদের আগাম কিছু না জানিয়ে হাতিদের জনবসতির কাছে এনে ছেড়ে দেওয়া হয়, যার ফলেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এর আগেও গত ১৫ মে, পুকুরিয়া বিটের পুকুরিয়া গ্রামে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছিল পরিমল মাহাত নামে এক ব্যক্তির। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ঝাড়গ্রাম, লোধাশুলি ও মাণিকপাড়া রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৬০-৭০টি হাতি ঘোরাফেরা করছে। বারবার সতর্কতা সত্ত্বেও বন দফতর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না বলে অভিযোগ।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হাতিদের হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও বন দফতর যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয় না। ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, স্থায়ী সমাধান সূত্রে হাতিগুলিকে অন্যত্র সরানোর জন্য বন দফতরকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যত্নীর ছেলে সনাতন জানান, ‘ঘর ভাঙ্গার শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। আমাদের মাটির ঘর, ঘর ভাঙলেই চাপা পড়ে মারা যাব এই ভয়ে মা অন্যত্র পালাচ্ছিলেন, তখনই হাতি মায়ের উপর আক্রমণ করে। আমি বউ বাচ্চাকে নিয়ে এক কোণের ভয়ে বসে ছিলাম।’
ঝাড়গ্রামের ডি এফও উমর ইমাম জানান, ‘হাতির হানায় মৃত পরিবারকে সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে। হাতির দলকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বন দফতরের পক্ষ থেকে। রাস্তার পাশে থাকা ঝোপ জঙ্গলগুলি পরিষ্কার করা হবে, যাতে মানুষ দূর থেকে হাতিকে লক্ষ্য করতে পারে। হাতি কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের টর্চ দেওয়া হবে।’
তন্ময় নন্দী