এতদিন ধরে পরিবেশপ্রেমীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। তাই এবার গাছ বাঁচাতে ঝাড়গ্রাম বনবিভাগ কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। জেলায় রাস্তার দু’পাশের কোনও গাছে পেরেক ঠুকে ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো যাবে না। পাশাপাশি, জঙ্গলের ভিতরে কোনওরকম জঞ্জাল বা বর্জ্য ফেললে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, জঙ্গলের গাছে পেরেক ঠুকে বিলবোর্ড, পোস্টার, ব্যানার লাগানো যাবে না। জঙ্গলের ভিতরে জঞ্জাল বা বর্জ্য ফেলা যাবে না। নির্দেশিকা অমান্য করলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
advertisement
ঝাড়গ্ৰাম জেলার বৃক্ষপ্রেমীরা বিজ্ঞাপনে গাছ ঢেকে যাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন। পেরেক দিয়ে বিজ্ঞাপনী পোস্টার লাগানোর পাশাপাশি গাছের গায়ে রঙ করে দেওয়া হচ্ছে। রাস্তার দু’পাশের জঙ্গলের বড় বড় গাছগুলি বিজ্ঞাপনদাতাদের নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে। শহর লাগোয়া কলাবনীর জঙ্গল ও দহিজুড়ি থেকে বেলপাহাড়ি যাওয়ার রাস্তার দু’পাশে গাছের গায়ে বিজ্ঞাপন লাগান হচ্ছে। সহজেই পথচলতি মানুষ ও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিজ্ঞাপনদাতারা এই কাজ করছেন।
আরও পড়ুনঃ পথদুর্ঘটনা রুখতে নতুন পন্থা, জেলা পুলিশের আরও এক কারসাজি! ভাবতেই পারবে না কেউ
গাছে পেরেক ঠুকলে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ক্ষতস্থানে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। দুর্বল হয়ে পড়া গাছ ঝড়-বৃষ্টিতে সহজে ভেঙে পড়ে। জেলাজুড়ে গাছ লাগানো ও বাঁচানোর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রচার চালানো হয়। প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করছে। তারপরেও এক শ্রেণির বিজ্ঞাপনদাতা গাছে পেরেক ঠুকে হোর্ডিং থেকে ব্যানার, পোস্টার লাগাচ্ছেন। পাশাপাশি, একশ্রেণির মানুষ গাড়িতে করে জঞ্জাল, আবর্জনা নিয়ে গিয়ে জঙ্গলের ভিতরে ফেলে আসছে। এতে জঙ্গলের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। দূষিত বর্জ্য খেয়ে বনের পশু-পাখিরা মারা যাচ্ছে। বনবিভাগের এক আধিকারিক বলেন, জঙ্গলে বর্জ্য ফেলতে আসা বেশকিছু গাড়ি আমরা আটক করেছি। বিষয়টি নিয়ে বনবিভাগ প্রচার চালাচ্ছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
শহর লাগোয়া কলাবনীর জঙ্গলের রাস্তার দু’পাশের গাছগুলিতেও এভাবে ব্যানার ঝোলাতে দেখা যাচ্ছে। গাছ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের পক্ষ থেকে সেগুলিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর পর কোন ব্যাক্তি বা সংস্থা গাছের উপর বিজ্ঞাপন দিলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে বন বিভাগ এমনটাই জানিয়েছে ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম। এই উদ্যোগ সময়োচিত।
তিনি আরও জানান, বৃক্ষরোপণ থেকে শুরু করে গাছ বাঁচানোর জন্য জেলায় বিভিন্ন প্রচার চালান হচ্ছে। আমরা এবিষয়ে স্কুল-কলেজেও প্রচার চালাচ্ছি। গাছে পেরেক লাগানোর বিষয়টি কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। বনবিভাগ উদ্যোগ নিচ্ছে ঠিকই, কিন্ত গাছের সুরক্ষার দায়িত্ব জেলার সর্বস্তরের মানুষের উপর রয়েছে।