এই বছরও তেমনই কয়েকজন অতিথি এসেছিলেন পুজো দেখতে। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন রসুলপুরের বাসিন্দা দেবজ্যোতি চৌধুরী, যিনি পরিবারের এক মহিলা সদস্যের বিশেষ বন্ধু। অতিথি হয়েও পুজোর রাতে তাঁর আচরণ নিয়ে সন্দেহের শুরু হয়েছিল পরিবারের কিছু সদস্যের মনে, তবে কেউ তেমন গুরুত্ব দেয়নি।
উৎসবের রাত আতসবাজি, সেলফিতে মজে…ট্রেনের হর্ন শুনতে পেল না কেউ! পিষে গেল ৬১ প্রাণ!
advertisement
রাত তখন প্রায় বারোটা। পুজোর শেষ ধাপ শেষ হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। অতিথি আপ্যায়ন ও প্রসাদ বিতরণ চলছে। সেই সময় পরিবারের এক সদস্য লক্ষ্য করেন, মা কালীর দেহ থেকে কিছু গয়না নেই। প্রথমে ভেবেছিলেন হয়তো গয়নাগুলি কোনও কারণে নামানো হয়েছে, কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়—গয়নাগুলি হারিয়ে গেছে।
কালীপুজোর রাতেই চুরি গেল ঠাকুরের গয়না। কে চোর?
পরিবারের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে মেমারি থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, পুজো চলাকালীন দেবজ্যোতি চৌধুরী সেখানে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু পুলিশের আগমন টের পেয়ে হঠাৎই উধাও হয়ে যান। পরিবারের সদস্যরাও নিশ্চিত করেন, পুজোর সময় তিনিই ঠাকুরের কাছে বেশি সময় কাটাচ্ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সূত্র ধরে তল্লাশি চালিয়ে দেবজ্যোতিকে আটক করা হয়। প্রথমে অস্বীকার করলেও জেরার মুখে ভেঙে পড়েন তিনি। স্বীকার করেন, কালীপুজোর ভিড়ের মধ্যে ঠাকুরের গয়না খুলে নিয়ে নিজের ব্যাগে লুকিয়ে রাখেন। পরে তাঁর কাছ থেকেই উদ্ধার হয় মা কালীর চুরি যাওয়া সব গয়নাই।
মেমারি থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে বর্ধমান আদালতে পেশ করেছে। আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গয়নাগুলি পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এমন এক দীর্ঘদিনের পরিচিত পরিবারে নিমন্ত্রিত হয়ে ‘বিশেষ বন্ধু’র এই কাজ ঘিরে বিস্মিত সবাই। দলুইবাজার জুড়ে এখন আলোচনা একটাই—কালীপুজোর পবিত্র রাতে এমন বিশ্বাসঘাতকতা কীভাবে সম্ভব!