দীর্ঘ কর্মজীবনে অবসর নেওয়ার পর, গত কয়েক বছর সৃজনশীল চিন্তাভাবনায় বুঁদ হয়ে রয়েছেন। গোবিন্দবাবুর হাতে তৈরি জিনিসের কাঁচামাল উপকরণ বাতিল ও সহজলভ্য। দীর্ঘ চিন্তা ভাবনার পর অল্প টাকা খরচ করে উপকরণ কেনেন অথবা সেগুলি সংগ্রহ করেন। সংগ্রহ বলতে, সময় পেলেই তিনি গ্রামের অলিগলি জলা জঙ্গল ঘুরে বেড়ান গাছের শুকনো ফল পাতার খোঁজে। আবার চলতি পথে কখনও ইট পাথরের টুকরোও বস্তাবন্দি করে বাড়ি ফেরেন সৃষ্টির নেশায়। আসলে এমন শিল্পীর কাছে ফেলনা কিছুই নয়, ডিম খেয়ে অবশিষ্ট ডিমের খোলা দিয়েও সামান্য শৈল্পিক দক্ষতায় ডিমের খোলকের গায়ে শৌখিন নকশা করে ঘর সাজানোর দ্রব্য হয়ে ওঠে। তাঁর প্রতিটি শিল্প সৃষ্টি দারুন আকর্ষণের। কিছুদিন অন্তর গ্রামের মানুষ অধীর আগ্রহে থাকেন আরও নতুন সৃষ্টি হচ্ছে তাঁর হাতে। এবার আরও একবার সকলকে চমকে দিয়ে সরু কাঠির সাহায্যে তৈরি করেছেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল রেপ্লিকা।
advertisement
আরও পড়ুন: লা নিনার কেমন প্রভাব দেশে? সব জল্পনা মিথ্যে করে ‘চরম হুঁশিয়ারি’ আবহাওয়া দফতরের
গোবিন্দ বাবুর সংসারের হাল ধরেছেন দুই ছেলে। প্রতিদিন গোবিন্দ বাবু সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সংসারের কাজ এবং অসুস্থ স্ত্রীর দেখাশোনা করে দুপুরের পর হাতের কাজ হালকা হলে তাঁর সৃষ্টির জগতে প্রবেশ। প্রতিদিন সংসারের কাজ বাদেও ১২-১৪ ঘন্টা পর্যন্ত সৃষ্টির নেশায় হাতে কাজ নিয়ে থাকেন। এবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের রেপ্লিকা তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ১৮ দিন। রেপ্লিকাটি তৈরি করতে তিনি একাধিকবার কলকাতা ছুটে গেছেন। খুব কাছ থেকে বার বার ঘুরে ফিরে দেখেছেন কলকাতা এই স্থাপত্য। এটি তৈরির জন্য কয়েক বছর আগে থেকে প্রস্তুতি। দীর্ঘ চিন্তা ভাবনার পর অবশেষে সরু কাঠি দিয়ে তৈরি সিদ্ধান্ত নেন কিছুদিন আগে। সেই মতই দীর্ঘচেষ্টার পর পূর্ণতা পায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল রেপ্লিকা।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর বাস দুর্ঘটনা! বিশাল ঝাঁকুনি দিয়ে উল্টে গেল বাস, চলে গেল তরতাজা দুটো প্রাণ, আহত বহু
এ প্রসঙ্গে শিল্পী গোবিন্দ হাজরা জানান, হাতের কাজ তৈরি শুরু হয়েছিল তখন স্কুল ছাত্র। মাঝে সংসার ও কাজের চাপে বেশ কিছু বছর বন্ধ হয় হাতের কাজ। কয়েক বছর হল, ছেলেরা সংসারের হাল ধরতে পুনরায় ভালোলাগার কাজে যুক্ত হওয়া। যে জিনিস তৈরি করার ইচ্ছা জাগে সেটি নিয়েই ভাবনা চিন্তা, তারপর কাজে হাত লাগানো। এভাবেই শতাধিক এমন সৃষ্টি নিজের ঘরে সজ্জিত রয়েছে। মানুষ বাড়িতে আসেন এই সমস্ত জিনিস দেখে খুশি হয়, আমারও আনন্দ লাগে। কোথাও প্রদর্শনের ডাক পেলে সমস্ত কিছু নিয়ে হাজির হই। সকলে দেখে আনন্দ পেলে সেটাই তৃপ্তি।





