রথ উপলক্ষে এখন সাজ সাজ রব দিগনগর ও তার আশপাশের গ্রামগুলিতে। রথ যাত্রা উপলক্ষে বাড়িতে বাড়িতে আসেন আত্মীয় পরিজন। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সব আচার মানা হয় দিগনগরের এই রথযাত্রায়। প্রাচীন রীতি মেনে, প্রথমে মূল মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে কদমখণ্ডীর কাছে মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়।
advertisement
মাসির বাড়ি যাওয়ার আগে স্থানীয় ‘কামারমহল’ থেকে জগন্নাথ মন্দিরে ভোগযাত্রা হয়। উল্টো রথের আগের দিন মন্দির থেকে মাসির বাড়ি গিয়ে জগন্নাথের মানভঞ্জন করতে যান দেবী লক্ষ্মী। তা ‘লক্ষ্মীযাত্রা’ নামে পরিচিত। সেখানে বলরামকে আড়াল করে জগন্নাথের সাথে দেবীর শুভদৃষ্টি বিনিময় ও মালাবদল হয়। তারপরেই জগন্নাথকে মূল মন্দিরে ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানান লক্ষ্মী।
রথযাত্রা উপলক্ষে বর্ধমান রাজ পরিবারের তরফ থেকে ফল মিষ্টিতে ভরা বিশেষ ডালা আসে। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকেও ডালা আসে মন্দিরে। মহা ধুমধামের মধ্য দিয়ে বিশেষ পুজোর পর রথে তোলা হয় জগন্নাথ বলরাম শুভদ্রাকে। প্রাচীন রথ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে আগেই। সেই কাঠামোর ওপর তৈরি করা হয়েছে নতুন রথ। এখানের রথযাত্রা দেখতে অগণিত ভক্ত ভিড় করেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন তাঁরা। অনেকে বোলপুরে হোটেলে রাত্রিবাস করে দিগনগরের রথ দেখতে আসেন।
প্রতিবছরই রথযাত্রা উপলক্ষে মন্দিরে নতুন রঙের প্রলেপ পড়ে। সাজিয়ে তোলা হয় চারপাশ। কয়েক দিন আগে থেকেই শুরু হয় রথের সাজসজ্জা। উদ্যোক্তারা জানালেন, রাজবাড়ির তৈরি রথের মূল কাঠামোটি এখন আর নেই। পুরনো কাঠামোর উপরে নতুন রথ বসানো হয়েছে। বর্তমানে গোটা উৎসব পরিচালনা করে মন্দির উন্নয়ন কমিটি। সব ধর্মের মানুষ রথযাত্রায় সামিল হন। রথ উপলক্ষে মেলা বসে এখানে।