ঘটনার জেরে শপিং মলের বেশ কয়েক জনকে আটক এবং গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে শপিংমলের হেড ক্যাশিয়ার প্রবীর হালদারের কাছ থেকেই ৬ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা উদ্ধার করে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ। পুলিশ তদন্ত শুরু করে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আইপিএল ম্যাচে জুয়া খেলার জন্য শপিং মল থেকে লক্ষাধিক টাকা চুরি হয়েছিল সেই টাকা। অবশেষে কিনার হল সেই ঘটনার।
advertisement
আরও পড়ুন – KKR Team News: নাইটদের হারে চিন্তা! ‘ঘাবড়াও মত’ এই হারের ম্যাচে কেকেআরের যা লাভ হল
রঘুনাথগঞ্জ থানার একটি অন্তর্গত একটি বিখ্যাত শপিং মলে চুরির ঘটনা ঘটে। উদ্ধার হয়েছে চুরি যাওয়া টাকার বেশিরভাগ অংশ এবং কিছু ইলেকট্রনিক গেজেট। জানা যায়, গত ২৫ মার্চ রাতের বেলা ওই শপিংমল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর চুরির ঘটনাটি ঘটে। মল কর্তৃপক্ষের নজরে ঘটনাটি আসতেই ২৬ মার্চ রঘুনাথগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। এরপরই তদন্ত নামে পুলিশ।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, “ওই মলে চুরির ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মলের চার কর্মীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে চুরি যাওয়া টাকা।”
২৬ শে মার্চ মল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাদের বর্তমান এবং প্রাক্তন দুই ম্যানেজার এবং এক ক্যাশিয়ারের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাদেরকে গ্রেফতার করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পায়। এরপরই গ্রেফতার করা হয় ওই মলের প্রধান ক্যাশিয়ার প্রবীর হালদারকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবীরবাবু নিয়মিত আইপিএল ম্যাচে জুয়া খেলতেন। সেই কারণেই তার প্রচুর টাকার প্রয়োজন হত। সম্প্রতি তিনি অনলাইন জুয়াতে প্রচুর টাকা হেরেও যান। পুলিশে তদন্তে আরও উঠে আসে, মল থেকে যেদিন টাকা চুরি হয় তার আগের দু’দিন প্রবীরবাবু মলের ‘কালেকশনের’ কোনও টাকা ব্যাঙ্কে জমা করেননি। তার পরিবর্তে সমস্ত টাকা একটি ‘ভল্টে’র মধ্যে রেখে সেটি কাঠের আলমারিতে রেখে দিয়েছিলেন। ভল্টে টাকা রাখা থাকলেও প্রবীরবাবু সেটিতে তালা না লাগিয়ে কাঠের আলমারিরতে রেখে আলমারির চাবি মলের ম্যানেজারকে দিয়ে চলে যান।
গত ২৫ মার্চ রাতে রঘুনাথগঞ্জ শহরের প্রতাপপুর কলোনির বাসিন্দা প্রবীরবাবু মলের পিছনের দিকের একটি শাটার খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর সেই কাঠের আলমারির দরজা ভেঙে ভল্ট থেকে টাকা চুরি করেন। গোটা ঘটনাটি যাতে সিসিটিভি ক্যামেরায় রেকর্ড না হয় তা সুনিশ্চিত করতে মলের সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ কেটে তার হার্ড ড্রাইভ পুকুরে ফেলে দিয়ে চলে যান।মল থেকে চুরি করে প্রবীরবাবু সেই টাকা ঔরাঙ্গবাদে নিজের শ্বশুরবাড়িতে রেখে দিয়ে আসেন এবং পরিবারের লোকেদেরকে বলেন রাস্তায় ওই টাকা কুড়িয়ে পেয়েছেন। পরে তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সেই টাকা সামশেরগঞ্জ থানার দুর্গাপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে দিয়েছিল।
পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে প্রায় সমস্ত টাকা উদ্ধার করেছে।জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘চুরি যাওয়ার নগদ টাকা থেকে ৮৩ হাজার টাকা এখনও আমরা উদ্ধার করতে পারিনি।’’ প্রবীর হালদার স্বীকার করেছেন ওই টাকা দিয়ে তিনি আইপিএল ম্যাচের জুয়া খেলেছেন। আরও জুয়া খেলার জন্য মলে চুরি করেছিলেন বলেও প্রবীর হালদার স্বীকার করেছেন বলে জানা গেছে।
Kaushik Adhikary