পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চম সর্বাধিক জনবহুল বর্ধমান শহরের প্রাণের স্পন্দন। শহরের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে এই স্টেশন।
১৮৫৪ সালে প্রথম রেল পরিষেবা চালু হয় পশ্চিমবঙ্গে। প্রথম রেলের চাকা গড়ায় হাওড়া থেকে পান্ডুয়া পর্যন্ত। ঠিক তার পরেই ১৮৫৫ সাল অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ১৭০ বছর আগে রেল পরিষেবা চালু হয় বর্ধমানে। ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, হাওড়া থেকে রানিগঞ্জ পর্যন্ত লাইন পাতা থাকলেও প্রথম দিনে বর্ধমান পর্যন্ত ট্রেন আসে। প্রায় ৩ ঘণ্টা ১০ মিনিট সময় নিয়ে হাওড়া থেকে ট্রেন এসে পৌঁছয় বর্ধমানে। চারদিকে তখন সাজ সাজ রব।
advertisement
সেই ঐতিহাসিক দিনে, বর্ধমানের রাজা স্বয়ং প্রথম ট্রেনে আগত যাত্রীদের স্বাগত জানানো ও তাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন। সেই আদি পথটিই বর্তমানে ‘মেন লাইন’ নামে পরিচিত। এর প্রায় ৫০ বছর পরে চালু হয় কর্ড লাইন। ১৭০ বছর আগে চালু হওয়া সেই রেলপথ যা মূলত রানিগঞ্জ থেকে কয়লা নিয়ে যাওয়ার জন্য ইংরেজরা তৈরি করেছিলেন আজও কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত ও রুটি-রোজগারের পথ।সময় থেমে থাকেনি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে বর্ধমান স্টেশনকে ক্রমাগত উন্নত করা হয়েছে। বর্তমানে ৮ টি প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট এই স্টেশন।
আরও পড়ুন: শরীরে আঁচিল খুবই সাধারণ, এটি এক মারণরোগের লক্ষণ হতে পারে! সময় থাকতেই সতর্ক হওয়া জরুরি
সারা দিনে প্রায় ৩০০টির বেশি এক্সপ্রেস, মেইল, এসএফ ট্রেন এখানে থামে। ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ জানান, বর্ধমান রেল স্টেশন একটি ঐতিহাসিক রেল স্টেশন। ১৮৫৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম রেল চালু হয় হাওড়া থেকে বর্ধমান যদিও সেই দিন রানিগঞ্জ পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্ধমান পর্যন্ত আসে ট্রেনটি।হাওড়া থেকে সেই দিন পতাকা দেখিয়ে গর্ভনর জেনারেল লর্ড ক্যানিং এই ট্রেনের সূচনা করেছিলেন।
৫ ফেব্রুয়ারি রানিগঞ্জ থেকে বর্ধমান হয়ে হাওড়া রেল পরিষেবা চালু হয়। তিনি আরও জানান, বর্তমানে বর্ধমান রেল স্টেশন নবরূপায়ণ হচ্ছে কিন্তু পুরনো ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখে যেন নবরূপায়ন হয় সেই দিকটিও দেখতে হবে। প্রাচীন রেল স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম এই বর্ধমান স্টেশনটি কেবল যাত্রী ওঠানামার কেন্দ্র নয়, এটি ব্রিটিশ আমলের স্থাপত্য, ইতিহাসের সাক্ষী।





