TRENDING:

Independence Day 2024: বোমা তৈরি করতে গিয়ে হারান চোখ, এই স্বাধীনতা সংগ্রামীই পরবর্তীতে হন ছাত্রদরদী অধ্যাপক

Last Updated:

Independence Day 2024: ১৯২০ সালে রংপুরের রায়চৌধুরী পরিবারের বসতভিটেটি হয়ে ওঠে বিপ্লবীদের গোপন আস্তানা। প্রায়ই ব্রিটিশ পুলিশ ঘেরাও করে রাখত এই বাড়িটিকে

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
রাহী হালদার, হুগলি: বোমা তৈরি করতে গিয়ে নষ্ট হয়েছিল কালুর চোখ, স্বাধীনতা সংগ্রামীর আট বছর কেটেছে ব্রিটিশদের কারাগারে। ২০০ বছর ধরে ব্রিটিশ শাসনের অবসানে ১৯৪৭ সালের ১৫  অগাস্ট ভারত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে উন্মোচিত হয়েছিল। অত্যাচার, পরাধীনতার বেড়াজাল থেকে ভারতকে মুক্ত করতে আত্মবলিদান দিয়েছেন বহু বীর।
advertisement

মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস, মহাত্মা গান্ধী, ভাগত সিং, রাজগুরু, ক্ষুদিরাম বসু, মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতি লতা ওয়াদ্দেদার, মাতঙ্গিনী হাজরা, জওহরলাল নেহরু-সহ অগণিত। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে অন্যতম এক সদস্য ছিলেন সুরেশপ্রসাদ রায়চৌধুরী ওরফে কালু। ১৯০৮ সালে অবিভক্ত পূর্ববঙ্গের পাবনা জেলার শক্তিপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পরে তাঁর বাবা মায়ের সঙ্গে রংপুরে চলে আসেন।

advertisement

তাঁর মা ছিলেন কিরণবালাদেবী। তিনি রংপুর জেলা মহিলা কংগ্রেসের নেত্রী ছিলেন। তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সুরেশ। তিনিও ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। বলা ভাল, মায়ের অনুপ্রেরণাতেই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনের স্বাদ পেতে যুগান্তর দলে নাম লিখিয়েছিলেন কালু।

১৯২০ সালে রংপুরের রায়চৌধুরী পরিবারের বসতভিটেটি হয়ে ওঠে বিপ্লবীদের গোপন আস্তানা। প্রায়ই ব্রিটিশ পুলিশ ঘেরাও করে রাখত এই বাড়িটিকে। কিন্তু বিপ্লবী সুরেশের মায়ের তখন বুদ্ধির কাছে বার বার হার মেনেছে ব্রিটিশ বাহিনী। কালুর বয়স যখন ২১, তখন ১৯২৭ সালে রংপুরের প্রাদেশিক যুব সম্মেলনে যুগান্তর দলের অবিভক্ত বাংলাদেশের রংপুর জেলার অন্যতম সংগঠক ছিলেন কালু। ১৯২৭ সালে প্রাদেশিক যুব সম্মেলনে কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে গেছিলেন কালু।

advertisement

আরও পড়ুন : বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসে কলকাতায় মেট্রো পরিষেবা কেমন থাকবে? প্রথম ও শেষ মেট্রোর সময় জানুন

তার কিছুদিন পরেই বোমা তৈরি করতে গিয়ে কালুর একটি চোখ নষ্ট হয়। সেই সময় মাস্টারদা সূর্য সেনের চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের ধাঁচেই জেলায় জেলায় সশস্ত্র আক্রমণের ছক ফাঁস হয়ে যাওয়ায় কালু ব্রিটিশদের হাতে ধরা পড়েন বেঙ্গল অর্ডিন্যান্স আইনে। শুরু হয় পুলিশের অত্যাচার। বিচারাধীন বন্দি হিসেবে সুরেশ প্রেসিডেন্সি জেল ,বহরমপুর জেল, হিজলি রাজস্থানের দেউলী ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটে তার আটটি বছর।

advertisement

জেলের মধ্যেই টানা ২৪ দিন অনশন ধর্মঘট করেন সুরেশ ও তাঁর সঙ্গীরা। বিনয় বাদল দীনেশের আত্মবলিদান দিবসে হিজলি জেলের মধ্যে স্মরণ সভার আয়োজন করেছিলেন সুরেশ-সহ সমস্ত বন্দি। তখন ব্রিটিশ পুলিশ তাঁদের উপর গুলি চালায়। সেই গুলিতেই মৃত্যু হয় সন্তোষ মিত্র, তারকেশ্বর সেনগুপ্তের। যদিও সুরেশ বেঁচে গিয়েছিল। জেলে বসেই তিনি বিএ পরীক্ষা দিয়েছিলেন। এরপরে দেশ স্বাধীন হয়। ৮ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পান সুরেশ।

advertisement

সুরেশপ্রসাদ ও তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যাদেবী অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বাবা তথা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছের মানুষ শিক্ষাবিদ ক্ষিতিমোহন সেনের। সুরেশের স্কুলজীবনের বন্ধু ছিলেন সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহর বাবা মনা গুহ। জেল থেকে মুক্ত হয়ে এবং স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পর সুরেশ প্রথমে রঙপুর কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। পরবর্তীকালে দেশভাগের সময় সুরেশ প্রথম চলে আসেন কলকাতায়। ১৯৫০ সালে গোপালচন্দ্র মজুমদারের হাত ধরে হুগলির খন্যানের ইটাচুনা বিজয় নারায়ণ মহাবিদ্যালয়ে ফিজিক্সের ডেমনস্ট্রেটর হিসাবে কাজে যোগদান তিনি। এবং কলেজ হস্টেলের সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি খন্যানের মুলটি মোড় এলাকায় বাড়ি তৈরি করেন। তাঁর দুই ছেলে সুখেশপ্রসাদ রায়চৌধুরী, সোমেশপ্রসাদ রায়চৌধুরী এবং দুই মেয়ে শিবানী রায়চৌধুরী ও সর্বাণী রায়চৌধুরী। বর্তমানে সুখেশবাবু কলকাতায় থাকলেও তাঁদের বসতভিটাতে থাকেন নাতিরা।

সুরেশপ্রসাদ রায়চৌধুরীর ছেলে সুখেশপ্রসাদ বলেন, ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন। স্কুলের মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। পরে ভূপেন্দ্রকুমার দত্তের হাত ধরেই যুগান্তর দলের সঙ্গে যুক্ত হন। এই দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অরবিন্দ ঘোষ, ডক্টর ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত, ক্ষুদিরাম, মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রফুল্ল চাকীরা। স্বাধীনতা সংগ্রামে সুরেশ প্রসাদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে তাম্রপত্র দিয়ে তাকে সম্মানিত করা হয়। এবং ভাতাও মঞ্জুর করেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৯৭৫ সালের ১৪ নভেম্বর তিনি প্রয়াত হন।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
শীতের মরশুম এলেই গৃহবধূদের উপরি রোজগার! সংসার সামলে ছুটছেন মোয়ার দোকানে
আরও দেখুন

সুরেশবাবুর কলেজের দর্শন বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক সুনীলেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘১৯৬৩ সালে ইটাচুনা কলেজে দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে আমি যোগদান করি। আমি তাঁকে সুরেশদা বলেই ডাকতাম। কলেজে আসার পথে প্রায়ই তাঁর কাছে বসতাম।তবে তিনি সাম্যবাদে বিশ্বাস করতেন। সেই সাম্যবাদ তাঁর জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাত নিয়ে এসেছিল, এসব কথায় কথায় তিনি মাঝে মাঝে বলতেন। তিনি অত্যন্ত ছাত্রদরদী ছিলেন। কলেজে ছাত্রদের পড়ানোর সময় ভালবেসে পড়াতেন।

Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে  ক্লিক করুন এখানে ৷ 
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Independence Day 2024: বোমা তৈরি করতে গিয়ে হারান চোখ, এই স্বাধীনতা সংগ্রামীই পরবর্তীতে হন ছাত্রদরদী অধ্যাপক
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল