TRENDING:

Independence Day 2024: দণ্ডায়মান অবস্থায় দহকার্য হয়েছিল এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর! শেষদিনেও মাথা নত করেননি

Last Updated:

Independence Day 2024: বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের মৃত্যুর পর তাঁর ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে, তাঁর দেহকে দণ্ডায়মান অবস্থায় দাহ করা হয়

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
পূর্ব মেদিনীপুর: অবিভক্ত মেদিনীপুর গোড়া থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের ঘাঁটি ছিল। ইংরেজদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে তাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন এখানকার বহু মানুষ। স্বাধীনতা আন্দোলনের সেই লড়াইয়ে আমজনতাকে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাঁরা কখনই ব্রিটিশ শক্তির ভয়কে তোয়াক্কা করেননি। সেরকমই একজন হলেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল। তিনি মৃত্যুর পরেও ব্রিটিশের কাছে মাথা নত করেননি। কিন্তু বর্তমানে তাঁর‌ই জন্মভিটে অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
advertisement

বীরেন্দ্রনাথ শাসমল দেশের অন্যতম অগ্রণী স্বাধীনতার সংগ্রামী। মেদিনীপুরের মাটি তাঁর চরণ স্পর্শে ধন্য হয়েছে। মেদিনীপুরের এক লৌহ মানব যার তেজ দীপ্তমানতায় ইংরেজ সরকার বারবার হার মেনেছে। এই লৌহ পুরুষ বীরেন্দ্রনাথ শাসমল৷ জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮১ সালের ২৬ অক্টোবর অবিভক্ত মেদিনীপুরের কাঁথি মহাকুমার চন্দ্রভেটি গ্রামের জমিদার পরিবারে। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতায় আসেন পড়াশোনার উদ্দেশ্যে। কলকাতার তৎকালীন মেট্রোপলিটন কলেজে ভর্তি হন। কলেজে পড়াকালীন রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়ের বিভিন্ন বক্তৃতা তাঁকে অনুপ্রাণিত করে। আইনপাস করার পর কলকাতা হাইকোর্টে বা অন্যান্য জেলার আদালতে স্বদেশী বিপ্লবীদের হয়ে তিনি মামলার লড়তেন। প্রয়োজনে সেইসব স্বদেশীদের আর্থিক সাহায্য‌ও করতেন।

advertisement

আর‌ও পড়ুন: আদিবাসীদের ধামসা-মাদল উপহার, কেন জানেন?

স্বদেশী ও বিপ্লবীদের পীঠস্থান মেদিনীপুর। ইংরেজরা বিপ্লবীদের শায়েস্তা করার লক্ষ্যে মেদিনীপুর জেলাকে দু’ভাগ করে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে। ইংরেজদের এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে মেদিনীপুরবাসী। গর্জে ওঠেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল। ১৯১৯ সালে ইংরেজরা সিদ্ধান্ত নেয় মেদিনীপুর জেলায় ইউনিয়ন বোর্ড তৈরি করার। বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের নেতৃত্বে শুরু হয় ইউনিয়ন বোর্ড প্রতিরোধ আন্দোলন। এই আন্দোলনে বীরেন্দ্রনাথ প্রতিজ্ঞা করেন যে, যতদিন না তিনি ইউনিয়ন বোর্ড তুলতে পারবেন, ততদিন পর্যন্ত তিনি খালি পায়ে ঘুরে বেড়াবেন। জুতো ছাড়াই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়ে ইউনিয়ন বোর্ডের খারাপ দিক সব শ্রেণির মানুষের কাছে তুলে ধরেন। এই আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে ব্রিটিশ সরকার ইউনিয়ন বোর্ডগুলি তুলে নেয়।

advertisement

১৯২১ সালে কংগ্রেস দেশব্যাপী হরতালের ডাক দেয়। কংগ্রেসের বঙ্গীয় সম্পাদক হিসেবে কলকাতায় হরতাল সংগটিত করেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল। চিত্তরঞ্জন দাশ, সুভাষচন্দ্র বসু ও বীরেন্দ্রনাথ শাসমলকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশ পুলিশ। বিচারে ছ’মাস কারাভোগ করেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ফিরে আসেন মেদিনীপুরে। মেদিনীপুরের মানুষ তাঁকে ‘দেশপ্রাণ’ উপাধিতে ভূষিত করে। দেশপ্রাণ বীরেন্দ্র শাসমলের জনপ্রিয়তা সহ্য করতে পারত না ইংরেজ সরকার। তাঁর তেজস্বিতাকে সহ্য করতে না পেরে ইংরেজ সরকার তাঁকে ‘ব্ল্যাক বুল’ বলত।

advertisement

চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন মামলায় তিনি স্বদেশীদের পাশে দাঁড়িয়ে মামলা লড়েছিলেন হাইকোর্টে। মেদিনীপুরের জেলাশাসক ডগলাস হত্যা মামলায় তিনি আসামিদের পক্ষ হয়েই লড়াই করেছিলেন মেদিনীপুর আদালতে। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ২৪ নভেম্বর ১৯৩৪ সালে মারা যান। তিনি কারাবাসের সময় লিখেছিলেন “স্রোতের তৃণ” নামে আত্মজীবনীমূলক বই। সেই বইয়ে তিনি লিখেছিলেন, “আমি কখনও কারও কাছে মাথা নত করিনি। তাই আমার মৃত্যুর পর আমার মাথা যেন অবনত করা না হয়।” তাই বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের মৃত্যুর পর তাঁর ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে, তাঁর দেহকে দণ্ডায়মান অবস্থায় দাহ করা হয়। কিন্তু এই বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের জন্মভিটে আজ চূড়ান্ত অবহেলায় পড়ে আছে। মানুষ ভুলতে বসেছে এই মহান বীর দেশনেতাকে।

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
​'শুভ বিজয়া' সন্দেশ স্পেশালে মন মজেছে জনতার! বর্ধমানের মিষ্টির দোকানে ভিড়
আরও দেখুন

সৈকত শী

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Independence Day 2024: দণ্ডায়মান অবস্থায় দহকার্য হয়েছিল এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর! শেষদিনেও মাথা নত করেননি
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল