আরও পড়ুন: বাবা-মার গলার নলি কেটে খুনের পর হেঁটেই চম্পট হুমায়ুনের, মেমারি থেকে কালনা হয়ে শান্তিপুর…
বিডিওর দেখানেপথে গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকে ফিরছে ট্যাংরা-শিঙি-মৌরলা। প্রায় দু’বছর আগে বিডিও অফিসে যোগদান করার পরই নীলোৎপলবাবু লক্ষ্য করেন, অফিস ক্যাম্পাসের মাঝখানে থাকা পুকুরটি কচুরিপানায় ঢেকে আছে, জলজ আগাছায় ভরে রয়েছে। তখনই সিদ্ধান্ত নেন এই পুকুরকে পুনর্জীবিত করে লুপ্তপ্রায় মাছের চাষ শুরু করবেন। শুধু মাছ নয়, পাশাপাশি হাঁস পালন, সবজি চাষ—সবই চলছে একই সঙ্গে। এই সাফল্য দেখে এবার পরিবেশ দফতরও এগিয়ে এসেছে। নিয়মিত নজর রাখেন খোদ বিডিও, আর তাকে সাহায্য করছেন মৎস্য দফতরের এক্সটেনশন অফিসার দীপক সেনাপতি এবং কর্মী দীপেশ দে। তাঁদের সমন্বিত চেষ্টায় আজ পুকুরে এক কুইন্টালেরও বেশি মাছ রয়েছে। নিয়মিত পুকুরটির যত্ন নেওয়া হয়, জল কমে গেলে পাম্পের সাহায্যে জল ঢোকানো হয়।
advertisement
জলজ পরিবেশ বজায় রাখতে পুকুরে লাগানো হয়েছে থানকুনি, লিলি, নল, হেলেঞ্চা, খাগর কলমির মতো উদ্ভিদ। বর্ষাকালে এই পুকুরের জল ছড়িয়ে পড়বে চারপাশের জমিতে, আর তার সঙ্গেই মাছ ছড়িয়ে পড়বে প্রাকৃতিক ভাবে। এর ফলে তারা স্থানীয় জলাশয়ে বংশ বিস্তার করতে পারবে, পৌঁছাবে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে। এই প্রকল্প এখন শুধু মাছ সংরক্ষণের প্রয়াস নয়, হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের আকর্ষণও। আর বিডিওর প্রয়াসে উজ্জীবিত হয়ে স্থানীয় মৎস্য চাষীরাও এখন দেশি প্রজাতির মাছ চাষে মজেছেন।
বিডিও নীলোৎপল চক্রবর্তী বলেন, “অভয় পুকুরে মাছ প্রতিপালন সাফল্যের সঙ্গে চলছে। তবে আমাদের লক্ষ্য শুধু মাছ চাষ নয়—মানুষকে দেখানো, কীভাবে ছোট উদ্যোগেও বড় পরিবর্তন আনা যায়। এই প্রকল্প দেখে অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন, এবং নিজেরাও বাড়ির পুকুরে মাছ চাষ শুরু করতে আগ্রহী হচ্ছেন।” এক্সটেনশন অফিসার দীপক সেনাপতির কথায়, “এই প্রকল্প শুধু সরকারি স্তরে সীমাবদ্ধ নেই। এটা যেন একটি বার্তা—আপনার ঘরের পাশের পুকুরটিও হয়ে উঠতে পারে জীববৈচিত্র্য রক্ষার ক্ষেত্র।” গোপীবল্লভপুরের মাটিতে গড়ে ওঠা এই নতুন সম্ভাবনার বীজ একদিকে যেমন সংরক্ষণ, তেমনি বিকল্প জীবিকার রাস্তাও দেখাচ্ছে—প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। মাছের গল্পে তাই এবার নতুন অধ্যায় লিখছে গোপীবল্লভপুর।